সুকুমার সরকার, ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ গতিপথ বদলে আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে সেদেশের উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু কাঁচা ঘরবাড়ি। ঝড়ের কবলে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলেরও।
জানা গিয়েছে, ভারী বৃষ্টির জেরে বাংলাদেশের কক্সবাজারে মাটির দেওয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের ৪ জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা ফকির মহম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), তাঁর ছেলে শাহিদুল মোস্তফা (২০), মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন (১৫) ও সাদিয়া বেগম (১১)। এছাড়াও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ঝড়ের সময় গাছের ডাল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে আবদুল ওহাব নামের এক ব্যক্তির। ওই জেলারই মিরসরাইয়ে গাছের ডাল পড়ে মারা গিয়েছে ছিদরাতুল মুনতাহা নামের এক শিশু। টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলায় গাছের ডাল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে রজ্জাক মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির। দক্ষিণের জেলা শরীয়তপুরেও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
মিধিলির (Cyclone Midhili) তাণ্ডবে সেদেশের উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায় হাজারের বেশি কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি টানা বৃষ্টির কারণে উঠতি আমন ফসলও ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি দপ্তর। শুক্রবার যেসব জায়গার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে তার মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বড় বড় গাছ ভেঙে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেললাইনে গাছ উপড়ে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম-নোয়াখালী-সিলেট তথা পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় ঘণ্টা দুয়েক। খারাপ আবহাওয়ার কারণে উপকূলীয় অনেক জায়গা দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
মিধিলিকে ঘূর্ণিঝড় হিসাবে ঘোষণা করার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ দুপুর ১২টায় বাংলাদেশের উপকূল স্পর্শ করে এটি। বরিশাল-খুলনা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম পর্যন্ত উপকূলজুড়ে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে আট ঘণ্টা ধরে সারা দেশে বৃষ্টি হয়েছে ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গিয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে ১৪ বছর আগে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘আয়লা’র মিল খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ শনিবার দুপুরের পর থেকে শক্তি হারিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.