Advertisement
Advertisement

নির্বাচনের আগে ৪ মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ হাসিনার

কেন এমন নির্দেশ?

Hasina Orders 4 Ministers to resign
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:November 6, 2018 7:22 pm
  • Updated:November 6, 2018 7:22 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাম-ডান থেকে ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নির্বাচনের পদ্ধতিগত আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলার আইনগত কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রিসভার চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশ দিয়েছেন। চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান ও প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলামকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান মন্ত্রিপরিষদই বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনের সময় এই মন্ত্রিপরিষদকে ছোট করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হচ্ছে না। শুধু যাঁরা অনির্বাচিত বা টেকনোক্র্যাট শাখায় (জাতীয় সংসদ সদস্য নন) ছিলেন তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

[বাংলাদেশে নিকেশ জেএমবি-র শীর্ষ নেতা, খতম পাচারকারীও  ]

Advertisement

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বা নতুন করে মন্ত্রী পরিষদ ছোট করতে হবে এমন কিছু বলা নেই। গতবার আমরা করেছিলাম সব দলকে অর্থাৎ সংসদে যাদের প্রতিনিধি ছিল রাখার জন্য।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘তদারকি সরকার বাতিল করে দেওয়ার সময় হাই কোর্টের রায়ে বলা আছে, নির্বাচনের সময় তফসিল ঘোষণার পর সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অনির্বাচিত কেউ থাকতে পারবেন না। তাই আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে অনির্বাচিতরা থাকতে পারবেন না।’ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রীদের কোনও ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা না নেওয়া এবং কঠোরভাবে আইন মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোনও মন্ত্রী সরকারি কোনও সুযোগ সুবিধা নিতে পারবেন না। আপনাদের কঠোরভাবে এ আইন মেনে চলতে হবে।’ ৮ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Advertisement

[একাত্তরের আরও দুই যুদ্ধাপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল ট্রাইব্যুনাল]

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ৮ নভেম্বর ঘোষণার কথা রয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। যদিও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করার জন্য গতকাল সোমবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করেছেন। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আজই তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র দিতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাবে। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তিনি বলেন, জোটের বিষয়ে দফায় দফায় বসতে হবে। এখন অন্যত্র ব্যস্ত থাকার কোনও সুযোগ নেই। চলতি বছর জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় সর্বশেষ রদবদলের পর এতদিন ৩০ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুইজন উপমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছাড়াও মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বে আছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জেনারেল হুসেন মহম্মদ এরশাদ। এছাড়া মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন আরও পাঁচজন।

[‘ভোটে না লড়লে অস্তিত্ব মুছে যাবে বিএনপি-র’]

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৩টায় গণভবনে আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে আটটি ইসলামী দলের আলোচনা হয়। ৮টি দল হচ্ছে- ইসলামি ঐক্যজোট, বাংলাদেশ মুসলিম লিগ, বাংলাদেশ জালালি পার্টি, আশেকিন আওলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ইসলামি জোট, বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামি জোট ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স। এদিকে ৮টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট আজ সন্ধ্যা ৭টায় ১৪ দলের সঙ্গে সংলাপে বসে। এই ৮ বাম দল হচ্ছে- কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লিগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।

[‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত শেখ হাসিনা]

এর আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১ নভেম্বর, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরির নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট ২ নভেম্বর, ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ ৪ নভেম্বর ও এইচএম এরশাদের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ৫ নভেম্বর আলোচনায় অংশগ্রহণ করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে এই রাজনৈতিক জোট তিনটি দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। তা হল- সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলো থেকে মন্ত্রী করে তাঁদের স্বরাষ্ট্র বা জনপ্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া এবং বিএনপি চেয়ারপারসন ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি ও তাঁর ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সাজা স্থগিত করা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ