Advertisement
Advertisement
Bangladesh

বাংলাদেশে ফের আক্রান্ত হিন্দুরা, ফেসবুক পোস্টে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মন্দির-বাড়িতে আগুন

মাগুরায় স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতেও চলে হামলা।

Hindu people, temples attacked in Narail, Bangladesh over facebook post | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 16, 2022 8:16 pm
  • Updated:July 16, 2022 8:20 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফেসবুকে পোস্ট ঘিরে ‘ধর্ম অবমাননা’র অভিযোগ তুলে ফের হিন্দুদের উপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটল বাংলাদেশে (Bangladesh)। নড়াইল জেলায় কয়েকটি বাড়ি, দোকান ও মন্দিরে হামলার পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ফেসবুক (Facebook)  পোস্টকে কেন্দ্র করে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। আর তারপরই সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়ি, দোকান ও মন্দিরে হামলা চলে। ঘটনার পর ওই এলাকার বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হামলাকে সংঘবদ্ধ ও পরিকল্পিত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে একযোগে প্রতিবাদে নেমেছেন বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুরা (Hindu)।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা-নির্যাতন (Attack) নতুন নয়। জঙ্গি ও মৌলবাদীরা ছলছুতোয় হিন্দুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এবার ঘটনাস্থল ফের নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায়। এর আগে একই অভিযোগ তুলে নড়াইলে একটি কলেজের অধ্যক্ষের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়। যার জেরে বাংলাদেশ জুড়ে তীব্র ধিক্কার ও নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এই কাণ্ডের জন্য ছাত্র-সহ একাধিক ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সেই বিচারপ্রক্রিয়া কাজ চলছে। এর রেশ শেষ না হতেই ফের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়িয়ে পড়ল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: NDA’র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জগদীপ ধনকড়]

অভিযোগ, শুক্রবার মাগুরা জেলা শহরের কেশবমোড়ে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা লীলা সরকারের পাঁচিল ঘেরা দেওয়াল টপকে তার উঠানো কয়েক বস্তা ময়লা ফেলা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে মাগুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। গত মাসে তাঁর স্বামী অধ্যাপক অনন্ত বিশ্বাস হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। লীলা সরকার স্বামীর মৃত্যুর দু’দিন বাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে তাঁর ছোট ছেলে অর্ঘ্য বিশ্বাসকে নিয়ে স্বামীর অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন। একজন স্কুল শিক্ষিকাকে এভাবে বিরক্ত করার ঘটনায় আশপাশের সংখ্যালঘু পরিবারগুলি আতঙ্কিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় লোহাগড়ার দীঘলিয়া গ্রামের সাহা পাড়ায় হামলা-অগ্নিসংযোগ নিয়ে সেখানকার সংখ্যালঘু কয়েকশো পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

Advertisement

এছাড়া গত বুধবার টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ভুষুণ্ডি গ্রামের রথখোলা মন্দিরে জঙ্গিরা একাধিক প্রতিমা ভাঙচুরের পাশাপাশি ৬০টি গাছ কেটে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, আকাশ সাহা নামে এক কলেজছাত্রের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দীঘলিয়া গ্রামে শুক্রবার নমাজের পর থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। পরে সন্ধ্যায় উত্তেজিত জনতা দীঘলিয়া বাজারের নিত্যদুলাল সাহা, অনুপ সাহা, অশোক সাহা, সঞ্জিৎ সাহার মুদির দোকান, গোবিন্দ কুণ্ডু ও গৌতম কুণ্ডুর মিষ্টির দোকানে ভাঙচুর করে। এছাড়া সাহা পাড়ার গৌর সাহা, চায়নারানি সাহা, বিপ্লব সাহার বাড়ি ভাঙচুর ও নাড়ু গোপালের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তেজিত জনতা রাত ৯টা নাগাদ আখড়াবাড়ি সর্বজনীন পুজোমণ্ডপে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজগর আলি জানান, আকাশ সাহা পলাতক থাকায় তার বাবা অশোক সাহাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন: ২১ জুলাই সমাবেশের পরই দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক মমতার, সংসদের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা]

এদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত চিন্থিত সাম্প্রদায়িক হামলাকারী অপরাধীদের মুখ না দেখে, দল না দেখে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচারের সম্মুখীন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ