সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে নববর্ষ অনুষ্ঠান নিয়ে ষড়যন্ত্র নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে হাজার বাধা অগ্রাহ্য করেও বছরের পর বছর ধরে নববর্ষ মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন চলছেই। ২০০১ সালে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১৫ জন নিহত হন। সেই তালিকায় ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান। তিনি মহিলা আওয়ামি লিগ সভাপতি ছিলেন। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে উদ্ধার হল মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি দিয়ে লেখা একটি চিরকুট। পালটা শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজক কমিটির অর্থ ও নিরাপত্তা বিষয়ক সদস্য আবতাহি রহমান।
আবতাহি রহমান জানান, গত ১১ এপ্রিল, রাত ৯টা ৪৫ মিনিট নাগাদ চারুকলার পশ্চিম পাশের দেয়ালে রঙের কাজ তদারকি করার সময় প্লাস্টিক চেয়ারের উপর একটি সাদা কাগজ ও ৫০ টাকার নোট পান। ওই কাগজে লেখা ছিল, “মঙ্গল শোভাযাত্রা কাজটা শিরকের। এখানে এসে ক্ষতি করো না তোমাদের। হামলা হতে পারে। দাজ্জালি বাহিনী পাবে না টের মোদের।” অবশ্য ইদ কিংবা পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “এখনও পর্যন্ত আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে এই ধরনের কোনও ঝুঁকি নেই।”
গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পয়লা বৈশাখে চারুকলা থেকে শোভাযাত্রা বেরিয়েছিল। সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম নেয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিও পায় এই কর্মসূচি। রাজধানী ঢাকায় বর্ষবরণ আয়োজনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে এই শোভাযাত্রা। আয়োজনে মূল ভূমিকায় থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাবেকরা। মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয় তাদের প্রস্তুতি। এবার এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। যার বিরোধিতায় সরব প্রায় সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.