সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফণীর ছোবল থেকে বাঁচতে ঈশ্বরই ভরসা! তাই দেশজুড়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আবেদন জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, লন্ডন সফর থেকে এই বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷
[ আরও পড়ুন: স্মার্টফোনে এই অ্যাপের মাধ্যমে এক ক্লিকেই জেনে নিন ফণীর আপডেট]
শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশই ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে ফণী৷ বর্তমানে শুক্রবার সকালে ওড়িশায় আছড়ে পড়েছে এই তীব্র ঘূর্ণিঝড়৷ বইছে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া৷ প্রবল জলোচ্ছ্বাস সমুদ্রে৷ পর্যটকশূন্য পুরী বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন৷ ব্যাহত ইন্টারনেট পরিষেবা৷ বিভিন্ন এলাকায় ভেঙে গিয়েছে গাছ এবং হোর্ডিং৷ প্রবল ঝড়ে পুরী লন্ডভন্ড হওয়ার আশঙ্কায় ত্রস্ত স্থানীয়রা৷ এদিকে, বাংলাদেশের ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ছে। পটুয়াখালি জেলার পায়রা ও বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্র বন্দরে সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরেও সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। ৩ মে ফণী ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে সন্ধ্যার দিকে খুলনা-সহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলিতে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এদিকে রংপুর, খুলনা, পটুয়াখালি, ভোলা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট সহ মোট ১৯টি জেলার কৃষকদের জন্য বিশেষ বার্তা দিয়েছে করা করেছে কৃষি তথ্য সার্ভিস। যেসব এলাকায় বা জমির বোরোধান ৮০ শতাংশের বেশি পেকে গেছে সেগুলো দ্রুত কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। কারণ ফণীর প্রভাবে এসব এলাকায় তীব্র বেগে বাতাস ও টানা চারদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টি হতে পারে। ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশ অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মহম্মদ সামসুদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ আশ্বাস দিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকা ঘেঁষে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত প্রস্তুতি রয়েছে৷ দপ্তরের সব কর্মী, আধিকারিকদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে৷ উপকূলের জেলাগুলিতে ১৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে৷ ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷ এছাড়া বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট, সশস্ত্র বাহিনী, দমকল বাহিনীর তরফেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে৷ শুধুমাত্র চট্টগ্রামেই খোলা হয়েছে ৭৪০টি আশ্রয় শিবির৷’
[ আরও পড়ুন: আয়লার স্মৃতি এখনও টাটকা, ফণী আতঙ্কে ফের ত্রস্ত সুন্দরবন]