Advertisement
Advertisement

Breaking News

Golden Bengal Tea

১ কেজির দাম ১৬ কোটি টাকা, বিশ্বের সবচেয়ে দামী! সোনায় মোড়া চায়ের চাষ বাংলাদেশে!

কীভাবে তৈরি হয় বিশেষ এই চা?

The Golden Bengal Tea of Bangladesh reportedly worth 16 crores per kilogram | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:March 9, 2022 8:00 pm
  • Updated:March 9, 2022 8:01 pm

সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার বাংলাদেশে এমন চা উৎপাদিত হতে চলেছে যার এক কিলোগ্রামের দাম ১৬ কোটি টাকা। গল্প নয়, এ খবর এক্কেবারে সত্যি। সোনার প্রলেপ দেওয়া এই সোনালি রঙের চা বিশ্বের সবচেয়ে দামী চা হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশের চা বাগানে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তৈরি করা হবে বলেই খবর।

Golden Bengal Tea 1

Advertisement

জানা গিয়েছে, ‘গোল্ডেন বেঙ্গল টি’ (Golden Bengal Tea) নামের এই বিশেষ চা স্বচ্ছ চায়ের কাপে ঢালার পর সোনালি রং দেখা যায়। যাতে ভাসে খাবার যোগ্য সোনার প্রলেপ। চায়ের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ ‘গোল্ডেন বেঙ্গল টি’-র মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১৪ লক্ষ পাউন্ড। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ১৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের মে মাস নাগাদ এই চা বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্যের লন্ডন ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত গোপনে এই চায়ের চাষ করা হচ্ছে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের চা শিল্প গবেষকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে এমন দামী চায়ের চাষাবাদের কথা বলা হলেও তাঁদের কাছে এরকম চা সম্পর্কে কোন তথ্য নেই।

Advertisement

Golden Bengal Tea 2

চায়ের প্রকারের দিকে এটি ‘ব্ল্যাক টি’ গোত্রীয় হলেও স্বচ্ছ পেয়ালায় পরিবেশন করলে এই সোনালি রং দেখা যাবে। প্রায় সাড়ে চার বছর সময় নিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে এই চা উৎপাদন করা হয় বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে। লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অলিউর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানান, বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করে এই চা তৈরি করা হয়। এর জন্য অনেক বেশি যত্নের পাশাপাশি বিদেশি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীরা চা তৈরি করেন। পুরো প্রক্রিয়ায় মেশিনের কোন সাহায্য নেওয়া হয় না। চা গাছের শুধুমাত্র দু’টি সোনালি পাতা দিয়ে এই চা তৈরি করা হয়।

অলিউর রহমানের কথা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে এই চায়ের চাষ শুরু করা হয়। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের কয়েকটি চা বাগানের অংশ বিশেষ ভাড়া নিয়ে তারা নিজেদের তত্ত্বাবধানে এই চায়ের চাষ করা হচ্ছে। প্রায় পাঁচ বছর পর, ৯০০ কেজি চা থেকে এক কেজি সোনালি চা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। সেই চায়ের পাতায় মেশানো হয়েছে ২৪ ক্যারেট সোনার প্রলেপ। উৎপাদকরা বলছেন, এর মধ্যেই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তারা গোল্ডেন বেঙ্গল চায়ের অর্ডার পেতে শুরু করেছেন।

[আরও পড়ুন: নারীদিবসে মহিলাদের অপমান! বিতর্কের ঝড় উঠতেই ক্ষমা চাইল Flipkart]

অনেক সময় অনেক গাছে সোনালি পাতা ধরেই না। আবার কোনও কোনও সময় সোনালি এই পাতা পেতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়। দীর্ঘসময় ধরে, প্রশিক্ষিত কর্মীদের মাধ্যমে আস্তে আস্তে এই চায়ের পাতা সংগ্রহ করা হয়। তারপর বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটিকে চায়ে রূপ দেওয়া হয়। একটি পর্যায়ে এর সঙ্গে গোল্ড ফ্লেক্স বা সোনার গুঁড়ো মেশানো হয়। অলিউর রহমান জানান, দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদন, বিশেষ যত্ন ও প্রক্রিয়া, বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীদের ব্যবহারের কারণে এই চায়ের মূল্য বেড়েছে। বাংলাদেশের কোন চা বাগানে এই চায়ের চাষাবাদ হচ্ছে, ব্যবসায়িক কারণে তা তিনি জানাতে রাজি হননি।

Golden Bengal Tea 3

এর মধ্যেই একাধিক অনুষ্ঠানে এই দামী চায়ের প্রদর্শনী হয়েছে। চলতি বছরের মে মাস নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে গোল্ডেন বেঙ্গল চা বাজারে আনার পরিকল্পনা করছে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ। লন্ডন ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের নানা দামী ব্র্যান্ডের চা সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তাঁরা বিশ্বের একাধিক রাজপরিবারের জন্যও চা সরবরাহ করে থাকেন। তবে এবারই প্রথম তাঁরা সম্পূর্ণ নিজেদের তত্ত্বাবধানে চা উৎপাদন করছেন। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে আমরা চা নিয়ে গবেষণা করলেও এত দামী চায়ের যে এখানে চাষাবাদ হচ্ছে, এরকম কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই।”

Golden Bengal Tea 4

অবশ্য অলিউর রহমান জানান, কয়েক বছর আগে চা নিয়ে গবেষণার সময় তাঁরা একটি বিশেষ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। তাতে দেখা গেছে, বিশেষ জাতের ‘ব্ল্যাক টি’ চা গাছের কচি সোনালি পাতা সংগ্রহ করে বিশেষভাবে গান মেটালের মাধ্যমে তাপ দেয়া হলে পাতা থেকে ঘাম বের হয়। সেটি আবার শুকানো হলে সেই পাতা সোনালি বর্ণের হয়ে ওঠে। সেই পাতা থেকে যে চা তৈরি হয়, সেটির রঙ সোনালি হয়ে থাকে। তবে গোল্ডেন বেঙ্গল চা ঠিক কোন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়, সেই ধারণা করতে পারছেন না। বাংলাদেশের একাধিক চা কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেও এই চায়ের বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্রিটিশ-ভারতে বাংলাদেশে ১৮৫৪ সাল থেকে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানের মাধ্যমে বাণিজ্যিক চা উৎপাদন শুরু হয়।

[আরও পড়ুন: ইছাপুর হত্যাকাণ্ড: আর্থিক বিবাদের জের, চা পানের পর ঠান্ডা মাথায় বৃদ্ধাকে খুন পরিচিতর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ