সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের আরও বেশি আর্থিক সহযোগিতা করবে রাষ্ট্রসংঘ। একথা জানিয়ে বাংলাদেশে সফররত রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিবের মানবিক বিষয়ক দূত ডঃ আহমেদ আল মেরিকী বলছেন, মানবিক সহযোগিতা বা ত্রাণ দিয়ে নয়, সকলকে একসঙ্গে মিলে রাজনৈতিকভাবে রোহিঙ্গা সংকটের মোকাবিলা করতে হবে। বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রসংঘের বাংলাদেশ অফিসে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিবের মানবিক বিষয়ক দূত ডঃ আহমেদ আল মেরিকীর কথায়, যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না হবে, ততদিন রাষ্ট্রসংঘ সকল প্রকার মানবিক ও আর্থিক সহযোগিতা বাংলাদেশকে দিয়ে যাবে। এই অনুষ্ঠানে ডঃ মেরিকীর পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিটা ফোরেও বক্তব্য রাখেন। তার আগে দু’জনেই গত ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। এরপর রাষ্ট্রসংঘের মানবিক বিষয়ক দূত ডঃ মেরিকী বলেন, “আজকে আমাদের রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। যাতে করে তারা ভালভাবে জীবন-যাপন করতে পারে। মায়ানমারে সামাজিক পরিবর্তন আসার পর তাদের সেদেশে না ফেরত যাওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের জন্য কাজ করতে হবে।” হেনরিটা ফোরে বলেন, “রোহিঙ্গা শিশু ও কিশোরদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে সহযোগিতা করতে হবে। সঠিক পথে বিনিয়োগের মাধ্যমেই রোহিঙ্গারা একদিন তাদের সম্প্রদায় তথা বিশ্বের জন্য সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে।” এর জন্য ইউনিসেফ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৬ লাখ ৮৫ হাজার রোহিঙ্গার পাশে দাঁড়াতে ২০১৯ সালে ১৫২ মিলিয়ন ডলার ফান্ড সহযোগিতা পাবে বলেও আশা করেছে। ইতিমধ্যে ফেব্রুয়ারির মধ্যে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৯ শতাংশ ফান্ড সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি। আরও বলেন, বয়স্ক রোহিঙ্গাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের কর্মসূচি-সহ নানা উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সের ১ লাখ ৫৫ হাজার শিশুকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মায়ানমারে সামরিক বাহিনীর অভিযানের ফলে গত বছর আগস্ট পর্যন্ত ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আশ্রয় নেয়।