সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি দূর অস্ত, এনিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮৭। এদিকে তিনদিন আগে বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বীকার করেছেন, দেশের সব জেলাতেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি! এবার তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ একটি মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ। এটি কারও একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কাজেই আমাদের সবাইকে মিলেই কাজ করতে হবে। জাহিদ মালিকের আশঙ্কার পর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের তরফে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা এবং মৃত্যুহার গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এজন্য মশার বংশবিস্তারে দেশের অনুকূল পরিবেশকে দায়ী করেছে সংস্থাটি।
শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৪৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এ জ্বরে ৩২৭ জন মারা গেছে। এর মধ্যে জুলাই মাসে ৬২ শতাংশ শনাক্ত এবং ৬৩ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার বেড়ে ০.৪৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ৫ বছরের তুলনায় অনেক বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও বাংলাদেশে ডেঙ্গু মহামারি, কিন্তু বর্তমান ডেঙ্গুর বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং আগের বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। এই ঢেউ শুরু হয়েছিল জুনের শেষের দিকে। আগের বছরের তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রাক-বর্ষা মরশুমে এডিস মশার জরিপে দেখা যায় যে, মশার ঘনত্ব এবং সম্ভাব্য হটস্পটের (Hotspot) সংখ্যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রা এবং উচ্চ আর্দ্রতা, অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষাপটে কারণে সারা বাংলাদেশে মশার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
WHO’র তথ্য মতে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে চলতি বছর ২০২৩ সালের মে মাস থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর অস্বাভাবিক বিস্তার শুরু হয়েছে যা এখনও অব্যাহত আছে। ২০০০ সাল থেকে রেকর্ড করা তথ্য অনুযায়ী একই সময়ের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৫০৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৪১ হাজার ৭০৪ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০ হাজার ৮০২ জন। এই সময়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭২ হাজার ২৮৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৬ হাজার ৯৮১ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩৫ হাজার ৩০৮ জন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.