Advertisement
Advertisement

অবরোধ-ভাঙচুরে রণক্ষেত্র ফরাক্কা, মৃত ১

পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে আজ বনধ পালন সিপিএস-কংগ্রেসের৷ পুলিশের গুলিতে কারও মৃত্যু হয়নি, দাবি এডিজি’র৷

1 Killed, several hurt in Police-Protesters Clash at Farakka
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 29, 2016 9:18 am
  • Updated:August 29, 2016 9:18 am

নিজস্ব সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকার দাবিকে সামনে রেখে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ফরাক্কা৷ জাতীয় সড়ক আটকে রেখে অবরোধ, সরকারি বাস ভাঙচুর, ইটবৃষ্টি, পুলিশকে আক্রমণ সবই চলল অবাধে৷ শেষপর্যন্ত গুলিতে ভকত শেখ (৩২)নামে একজনের মৃত্যু ঘিরে তপ্ত হল পরিস্থিতি৷ যদিও রাজ্যের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুলিশের গুলিতে কারও মৃত্যু হয়নি৷ পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূন্যে গুলি চালিয়েছে৷

পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক পুলিশকে প্ররোচিত করার চেষ্টা হয়৷ ছটি সরকারি বাস সম্পূর্ণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, পুলিশ শূন্যে গুলি ছুড়েছে৷ পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যাননি৷ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীও৷ তাঁর অভিযোগ, “গ্রামবাসীদের সামনে রেখে পুলিশের উপর দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে৷”

Advertisement

এদিন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) আরও বলেন, “এক ঘণ্টা অবরোধ চলার পর পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের অবরোধ তুলতে অনুরোধ করে৷ কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বিনা প্ররোচনায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়৷ বোমা ছোড়ে৷ ঘটনায় ন’জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন৷’’ তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে ভকত শেখের দেহ পাওয়া গিয়েছে৷ তাঁর দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে৷ বিক্ষোভকারীদের গুলিতেই সম্ভবত তাঁর মৃত্যু হয়েছে৷ ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে৷

Advertisement

এদিন পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, পুরো ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত৷ কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য মানুষকে প্ররোচিত করেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে৷ বেছে বেছে ছটি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে৷ পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে৷ কংগ্রেসেরই এক নেতার জন্য মুর্শিদাবাদে দল জমি হারিয়ে ফেলেছে৷ সেজন্যই পরিকল্পিতভাবে এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার হঠাৎই বিদ্যুৎ চলে যায় জিগরি গ্রামে৷ প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা৷ স্থানীয় বিদ্যুৎ বন্টন অফিসে যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকে বলা হয়, অর্জুনপুর ফিডারে জরুরি মেরামতির জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে৷ শুক্রবার রাতে গ্রামে আবার বিদ্যুৎ ফিরে আসে৷ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন সবাই৷ কিন্তু শনিবার ফের চলে যায় বিদ্যুৎ৷ বিদ্যুৎ বন্টন অফিসে যোগাযোগ করা হলে আবারও যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলা হয়৷ শনিবার দিনভর সেই ত্রুটি মেরামত করা যায়নি৷ রবিবার সকালে গরমে তিতিবিরক্ত গ্রামবাসীরা বিদ্যুৎ বন্টন অফিসে গিয়ে দেখেন, সেটি তালাবন্ধ৷

এর পরই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা সকাল ন’টা নাগাদ জিগরি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন৷ অবরোধকারীরা বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বাস ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ বাহিনী৷ অবরোধ তুলতে গেলে রীতিমতো  ধুন্ধুমার বেধে যায়৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও বোমা ছুড়তে থাকে অবরোধকারীরা৷ আহত হন ফরাক্কা থানার আইসি সমীররঞ্জন লালা-সহ ন’জন পুলিশ কর্মী৷ এর পরই পুলিশ গুলি চালায়৷ ঘটনায় ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ধৃতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছ৷

পুলিশের এদিনের ভূমিকাকে ‘বর্বরোচিত’ আখ্যা দিয়ে সোমবার ১২ ঘণ্টা জঙ্গিপুর মহকুমা বনধের কথা ঘোষণা করেছেন জেলা সিপিএমের সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য৷ কংগ্রেসও এই বন্ধে শামিল হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ