গৌতম ব্রহ্ম: মৃত্যুর প্রহর গুনছে জীবনদায়ী ওষুধ। একটা-দু’টো নয়। প্রায় ১৫ হাজার ইঞ্জেকশনের ভায়াল! ২৫০মিলিগ্রাম পাওয়ারের অ্যাম্পিসিলিন ৪৬২৫, ক্লকসাসিলিন ৬৩৫০ ও সেফোট্যাক্সিম ৩৯৫০। প্রথম ব্যাচের সব ওষুধের মেয়াদ শেষ জুনে। শেষের দু’টি ওষুধের আগস্টে।
[ওষুধ দিতে একই সিরিঞ্জের ব্যবহার, যোগীর রাজ্যে HIV আক্রান্ত ৪০]
৩-৫ মাসের আয়ু নিয়ে হাওড়া হাসপাতালের মেডিক্যাল স্টোরে মৃত্যুর প্রহর গুনছে এই ১৫ হাজার ওষুধ। নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছেন, এত কম সময়ের মধ্যে এই ওষুধ কাজে লাগানো অসম্ভব। তাই ওষুধগুলিকে বাঁচাতে সোমবার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের উপ-স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে (ই অ্যান্ড এস) চিঠি লিখেছেন হাওড়া হাসপাতালের সুপার ডা. নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে সেই চিঠির কপিই স্বাস্থ্যদপ্তর নিজের ওয়েবসাইটে এদিনই সরকারি নির্দেশিকা বিভাগে তুলে দেয়। উদ্দেশ্য একটাই, যদি কোনও হাসপাতালের এই ওষুধগুলি লাগে তাহলে তারা হাওড়া হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওষুধগুলি সংগ্রহ করবে।
২০১৭ সালে এই তিন ধরনের ইঞ্জেকশন হাসপাতাল মজুত করেছিল। নারায়ণবাবু জানিয়েছেন, “বাজারে ওই সময় এই ওষুধগুলির খুব অভাব ছিল। তাই বেশি করে তুলে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলি মেয়াদ শেষের আগে ‘স্টক’ শেষ হবে না। যাতে এই দামি জীবনদায়ী ওষুধ নষ্ট না হয় তাই এই পদক্ষেপ করেছি।” নারায়ণবাবু আরও বলেন, “আমরা চাই অন্য হাসপাতাল নিয়ম মেনে আমাদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সংগ্রহ করুক।” সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের পাশাপাশি এই চিঠির প্রতিলিপি হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও স্বাস্থ্যভবনের তথ্যপ্রযুক্তি ইনচার্জকেও দেওয়া হয়েছে।
অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সবই পেনিসিলিন গোত্রের। রেসপিরেটরি ইনফেকশন, স্পন্টেনিয়াস ব্যাকটেরিয়াল পেরিটোনাইটিস, মেনিনজাইটিসের মতো রোগে এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলি প্রেসক্রাইব করা হয়। জীবনদায়ী ওষুধ হিসাবে এদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মহার্ঘ্য ওষুধ অবশ্যই কাজে লাগা উচিত। এমনটাই মত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের। স্বাস্থ্যদপ্তরও চায় ওষুধগুলি কাজে লাগুক। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানালেন, চাহিদা ও জোগান বুঝে ওষুধ তোলে। কিন্তু, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে ওষুধ বাঁচানোর উদ্যোগও নিতে হবে হাসপাতালকে। হাসপাতালের কাজই তো বাঁচানো। তা সে ওষুধ হোক বা রোগী!
[যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় ত্রাণ পেতে দেহ বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন মহিলারা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.