রঞ্জন মহাপাত্র, দিঘা: বর্ষশেষে সৈকত শহরে ছন্দের স্নিগ্ধতা। লক্ষ্মীবারে দিঘা দেখল ঘরের লক্ষ্মীদের কেরামতি। ৪ হাজার মহিলার শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হল মোহনা। বিচ ফেস্টিভ্যালে আসা পর্যটকদের তখন পায় কে! একসঙ্গে অনেককে নিয়ে শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলতে দিঘা বদ্ধপরিকর।
[সমুদ্রপাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাস, এমন দিঘা কখনও দেখেছেন?]
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউ দিঘার ওসিয়ানা ঘাটে তখন হাজার হাজার মহিলা। লাল-পারের শাড়িতে তাদের যেন আরও সুন্দরী দেখাচ্ছে। ঘড়ির কাঁটা তখন চারটে পেরিয়েছে। এমন সময় ৪ হাজার মহিলা একসঙ্গে শঙ্খে ফুঁ দিলেন। হর্ষধ্বনিতে বদলে গেল পরিবেশ। দিঘায় অন্যরকম এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে শঙ্খধ্বনি রেকর্ডিং করে ৪৯টি ক্যামেরা। তার মধ্যে ৩৫টি স্টিল, ১০টি মুভি ক্যামেরা ও চারটি ড্রোন ক্যামেরা এই অনুষ্ঠানকে ফ্রেমবন্দি করে।
[হাত বাড়লেই সবুজের রাজ্য, মন ভাল করার রসদ জঙ্গলমহলে]
গিনেসে নাম তোলার বিষয়ে শর্ত পূরণ হচ্ছে কি না তা দেখতে ৬জনের প্রতিনিধি দল দিঘায় এসেছিলেন। তাদের নির্দেশে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ৫০জন মহিলাকে নিয়ে এক একটি দল করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের আলাদা পরিচয়পত্র ছিল। শাঁখ বাজান এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তারা মূলত রামনগর ১ এবং ২ ব্লক থেকে এসেছিলেন। ওই ছাপোষা বধূদের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দেন এলাকার কয়েকটি স্কুলের ছাত্রীরা। টানা পাঁচ মিনিট শাঁখ বাজিয়ে তারা নিজেদের জাত চেনান।
[মাছের সঙ্গেই দিন-রাত, পর্যটনের অন্য স্বাদ ফিশ ট্যুরিজমে]
বিকেল চারটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ তথা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী, তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, জেলাশাসক রেশমি কোমল-সহ বিশিষ্টরা। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বিচ ফেস্টিভ্যাল। তার টানে প্রচুর পর্যটক এসেছেন দিঘায়। তারাও এমন এক অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে পেরে রোমাঞ্চিত। ওড়িশা লাগোয়া সৈকতে শঙ্খধ্বনি শুনতে প্রতিবেশী রাজ্যের বহু সাধারণ মানুষ এসেছিলেন। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাহামাসে একসঙ্গে ২৯৫ জন মহিলা একসঙ্গে বাঁশি বাজিয়েছিলেন। আয়োজকরা মনে করছেন খুব সহজেই স্বীকৃতি পাবে ভূমিকন্যাদের শঙ্খধ্বনি। এই নিয়ে সাংসদ শিশির অধিকারী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প দিঘা। সৈকত শহরকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার একাধিক প্রকল্প নিয়েছে। সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছি আমরা।
দেখুন ভিডিও: