কিংশুক প্রামাণিক: মেলা অফিসের নিচে হলঘরটায় পর পর বিশাল এলইডি। কোনওটিতে লেখা কচুবেড়িয়া, কোনওটি লট ৮, আবার কোনওটি মেলা গ্রাউন্ড। স্পাই ক্যামেরা থেকে ‘লাইভ’-এ আসা প্রচুর ছবি। স্ক্রিনে চোখ রাখলেই এক মুহূর্তে দেখা যাবে সাগরে কোথায় কী হচ্ছে। এই ঘরটাই গঙ্গাসাগর মেলার ‘ওয়ার রুম’। যার পোশাকি নাম ‘তীর্থসাথী’।
[বিকিনিতে দিঘার সৈকত মাতাচ্ছেন বিদেশি সুন্দরীরা]
কিন্তু এতেও এখন হবে না। সাবধানের মার নেই। তাই অজানা হামলার আশঙ্কায় এবার গঙ্গাসাগর মেলাকে মুড়ে ফেলা হচ্ছে নিরাপত্তার কড়া চাদরে। ওয়ার রুম তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সামনের বড় মাঠে। ওখানে মকর স্নানের ক’টা দিন চল্লিশটি মনিটরিং এলইডিতে চোখ রেখে জাগ্রত থাকতে হবে প্রশাসনকে। বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর, স্থল পথ থেকে জলপথ, সর্বত্র পাঁচশো সিসিটিভি ক্যামেরা বসছে। প্রায় ১২৫ কিলোমিটার পথ জুড়ে এককথায় নজিরবিহীন কাণ্ড।
[ভোরের মতো পড়ন্ত বিকেলেও মোহময়ী, গজলডোবা যেন স্বপ্নের ঠিকানা]
এমন নয়, এবার আল কায়দা জঙ্গিরা রাজ্যে হামলা চালাতে পারে, এই খবরে নিরাপত্তা বেড়েছে সাগরে। বরং অনেক আগে থেকেই টিমকে নামিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সব কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতেই মেলা শুরুর আগে এই সাগর সফরও সেরে ফেলেছেন তিনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক রত্নাকর রাও বলেন, “আমরা কোনও ঝুঁকি নিচ্ছি না। বাবুঘাটে এসে পুণ্যার্থীরা জড়ো হন। ওখান থেকে ডায়মন্ড হারবার হয়ে লট ৮। ভেসেল মুড়ি গঙ্গা পেরিয়ে কচুবেড়িয়া, তারপর সাগরযাত্রা। এই গোটা পথটি এই প্রথম আমরা সিসিটিভিতে নজর রাখছি। আগে কখনও এমন হয়নি। দেশের অন্যান্য মেলাতেও এমন হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিরাপত্তায় কোনও ক্রুটি রাখব না।” সবমিলিয়ে সাগরে এবার জলে, স্থলে, আকাশে নিরাপত্তা অনেক বেড়েছে।
[এভাবেই জানুয়ারিতে টানা ৯ দিন ছুটি পেতে পারেন সরকারি কর্মীরা]
বস্তুত, এবার সাগরে রেকর্ড ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা। কারণ, এবার দেশে কুম্ভমেলা বা অন্য কোনও বড় মেলা নেই। জেলা প্রশাসনের আশা, ২০ থেকে ২৫ লক্ষ মানুষ এবার গঙ্গাসাগরে আসবেন। ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীও সংখ্যায় অনেক বেশি হবে। গোটা বিশ্বজুড়ে জঙ্গি নাশকতা বাড়ছে, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। তাই গঙ্গাসাগরের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য প্রশাসন। ১০ জানুয়ারি থেকে সাগরযাত্রা শুরু হয়। তার বহু আগে থেকেই অবশ্য বাবুঘাটে ভিড় জমাতে শুরু করেন ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীরা। নাগা সন্ন্যাসীদেরও আগমন ঘটে। প্রথমে বাসে লট ৮ অভিমুখে যাত্রা। ১৪ জানুয়ারি ভোরে মকরস্নান।
ছবি: অমিত ঘোষ
[ক্রিকেটের হাত ধরে পরিবারের কাছে ফিরল মালদহের রাজীব]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.