Advertisement
Advertisement

Breaking News

সংসারে উচ্ছিষ্ট! বৃদ্ধা মাকে বাসস্ট্যান্ডে ফেলে যাওয়ার চেষ্টা ছেলের

ছেলের ভাগ্যে জুটল গণধোলাই।

75-year-old mother dumped by son
Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:October 25, 2018 12:47 pm
  • Updated:October 25, 2018 12:49 pm

অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বৃদ্ধা মাকে আর সংসারে দরকার নেই। তাই সাইকেলের সঙ্গে মাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে টানতে টানতে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে এসেছিল ছেলে। একটাই উদ্দেশ্য, কোনও এক দূরপাল্লার বাসে মাকে তুলে দেওয়া। নতুবা অকুস্থলেই ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়া। বৃদ্ধা মা পড়াশোনা জানেন না। কোনওদিন একা বাড়ির বাইরেও বের হননি। তাই ফের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পথচারীদের নজরে পড়ে যাওয়ায় এ যাত্রায় সহায় সম্বলহীন হতে হল না বৃদ্ধাকে। উলটে গুণধর ছেলেকে খেতে হল রামধোলাই। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা থানার জোরাগেড়িয়া ফাঁড়ির খাকুড়দা বাসস্ট্যান্ডের কাছে।

অভিযুক্ত ছেলের নাম সনাতন সাঁতরা (৪৫)। আর বৃদ্ধার নাম চঞ্চলা সাঁতরা (৭৫)। জানা গিয়েছে, স্বামী স্ত্রীর সংসারে মা অতিরিক্ত সদস্য হয়ে পড়েছিলেন। এনিয়ে স্বামী সনাতনের কাছে দিনরাত অনুযোগ করতো স্ত্রী। বয়সজনিত কারণে বৃদ্ধাও খিটখিটে হয়ে গিয়েছিলেন। তাই লক্ষ্মীপুজোর দিন মাকে টুক করে বাসস্ট্যান্ডে ফেলে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ছেলে। তবে বিধি বাম। বৃদ্ধাকে সাইকেলে করে দড়িতে বেঁধে আনার দৃশ্য অনেকে দেখেছেন। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা না করলেও গোটা বিষয়টির দেখে নজর রেখেছিলেন। আচমকাই প্রত্যক্ষদর্শীদের খেয়াল হয়, বৃদ্ধাকে বাসস্ট্যান্ডে ফেলে রেখে পালাবার তাল করছে ওই ব্যক্তি। প্রথমেই গুণধর ছেলেকে ঘিরে ধরে উত্তেজিত জনতার একাংশ। বাকিরা সাইকেলের দড়ি থেকে বৃদ্ধাকে বন্ধন মুক্ত করেন। এরপর বৃদ্ধার মুখে ব্যক্তির পরিচয় শোনার পরেই শুরু হয়ে যায় গণধোলাই। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লোকজনের অভাব ছিল না। কাছেই দাঁড়ানো সিভিক ভলান্টিয়ার বেলদা থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।  উত্তেজিত জনতার হাত থেকে সনাতন সাঁতরাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে বৃ্দ্ধা চঞ্চলাদেবীকে জলখাবার খাইয়ে সুস্থ করে টোটোয় চাপিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

[ঘন কুয়াশায় বিপত্তি, পূর্ব মেদিনীপুরে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল পথচারীর]

পুলিশ জানিয়েছে, সনাতনকে আটক করা হলেও পরে তাঁর স্ত্রী,  ছেলে ও স্থানীয় এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ফাঁড়িতে আসনে। সেখানেই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়। পারিবারিক অশান্তির ঘটনা হওয়ায় সনাতন সাঁতারার বিরুদ্ধে কোনও স্বতঃপ্রণোদিত মামালা রুজু হয়নি। তবে মায়ের সঙ্গে ফের এই অমানবিক আচরণ করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে তার বিরুদ্ধে। সনাতন সাঁতরাকে এনিয়ে সতর্ক করেছে বেলদা থানার পুলিশ। জেরায় সনাতন জানিয়েছেন, তাদের বাড়ি দাঁতন দু’নম্বর ব্লকের সাউরি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামসুন্দরপুরে৷ অভাবের সংসারে অশান্তি নিত্যদিনের৷ তার মধ্যে মা নাকি অতিরিক্ত খিটখিট করেন৷ স্ত্রী, ছেলেদের সঙ্গে সবসময় ঝগড়া করেন৷ তাই তিতিবিরক্ত হয়ে মাকে ওইভাবে সাইকেলে বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল৷ পুলিশের বক্তব্য, এই সনাতন সাঁতরা সামান্য হলেও মানসিক ভারসাম্যহীন৷ তাই আলোচনার সময় তাকে চিকিৎসারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

[জঙ্গলে বাঘে-মানুষে লড়াই, সঙ্গীকে হারিয়ে কাতর দুই মৎস্যজীবী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ