সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: চেতলা অগ্রণীর মেহগনির দুর্গা প্রতিমা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। হইচই হওয়ার সব উপাদানই ছিল দুর্গাপুরের বি-জোন আদিবেদি দুর্গাপুজোতেও। এখানে প্রতিমায় ৮০০ কেজির গামা কাঠ ব্যবহার হয়। কাঠের উৎস নিয়ে অবশ্য কোনও বিতর্কের জায়গা নেই। কারণ বন বিভাগের থেকে নিয়ম মেনে আড়াই লক্ষ টাকার কাঠ কেনা হয়েছে। বিপুল কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই প্রতিমা। তৃতীয়া থেকেই যা চাক্ষুষ করতে পারছেন দর্শনার্থীরা।
[২০০০ গ্রামের সোনার গয়নায় সেজে উঠছেন মরিচকোটার উমা]
দুর্গাপুরে ৮ কুইন্টাল কাঠের দুর্গা। হ্যাঁ, এটাই ডিপিএল টাউনশিপের বি-জোন আদিবেদি দুর্গাপুজোয় ক্যাচলাইন। সপরিবার উমার ওজন প্রায় ৮০০ কেজি৷ ৬১ তম বর্ষে কাঠের মূর্তি দিয়েই দর্শকদের আনন্দ দিতে চায় পুজো কমিটি। ১৬/১০ ফুটের লম্বা গামা কাঠের গুঁড়িকে নিঁখুতভাবে কেটে তৈরি করা হয়েছে মূর্তি৷ প্রতিমা গামা কাঠের রঙের৷ এতে কোনওরকম কৃত্রিম রঙ ব্যবহার হয়নি৷ থিম ‘জীবে শিবে দারুময়ী দেবী দুর্গা’৷ থিমের ধাঁচে তৈরি হয়েছে মণ্ডপও৷ স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ধর্ম মহাসভার ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ – মণ্ডপের থিম বেছেছেন উদ্যোক্তারা৷ মূল মণ্ডপে মানুষের অবয়বে প্রায় সাড়ে পাঁচশো মূর্তি রয়েছে। বোঝানো হয়েছে মানুষের মাঝেই ঈশ্বর৷ প্রাচীন মন্দিরের অনুকরণে গড়া হয়েছে মণ্ডপ৷ শুধুই কাঠের কাজ রয়েছে মণ্ডপে৷ প্রতিমা ও মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্বে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শিল্পী সোমনাথ অধিকারী৷
[২৫ মাথা, ৫০ হাতের চামুণ্ডা সিউড়ির মহাপুজোর সেরা আকর্ষণ]
উদ্বোধনেও ছিল চমক৷ তৃতীয়ায় মায়াপুরের বিদেশী সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা নগর সংকীর্তনের পর উদ্বোধন করেন৷ উদ্বোধনের পর তাঁরা কৃষ্ণের লীলা ও পদাবলি৷ পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক উমাপদ দাস জানান, বহুরূপের মধ্যে আসল রূপকে খুঁজে নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য৷ যার দ্বারা এই সমাজ গড়ে উঠবে৷ দুর্গাপুরের মানুষ আগে কখনও নিখাদ গামা কাঠের দুর্গামূর্তি দেখেননি৷ তাদের জন্যই এই আয়োজন। এবার পুজোর বাজেট প্রায় নয় লক্ষ টাকা। মণ্ডপের সঙ্গে মানানসই আলোকসজ্জা৷ ইতিমধ্যেই এই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ইস্পাতনগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতুহল তৈরি হয়েছে৷
ছবি : উদয়ন গুহরায়