Advertisement
Advertisement
Boy Suicide

প্রেমিকের সঙ্গে পলাতক মা, ফের বিয়ে করতে পারেন বাবা, আতঙ্কে আত্মঘাতী ৯ বছরের বালক

মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদে।

9 year old boy allegedly suicide in fear of father will get married again | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 8, 2022 9:02 am
  • Updated:August 8, 2022 9:02 am

অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: মা চলে গিয়েছেন পরপুরুষের সঙ্গে। এদিকে বাবা আবার বিয়ে করার তোড়জোড় শুরু করেছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনেছে সেই আলোচনা। বাবা আবার বিয়ে করলে তাদের দুই ভাইয়ের কষ্ট হবে। সৎ মায়ের আতঙ্ক, অশান্তির ভবিষ্যৎ ঘিরে হতাশা গ্রাস করল এক ভাইকে। সেই হতাশায় ৯ বছরের বালক জুনাইদ আলম ওরফে রিমন বাড়িতেই বারান্দায় গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করল।

দাদার ঝুলন্ত দেহ নামায় ছোট ভাই। যে সবে কিনা পাঁচের চৌকাঠ পেরিয়েছে। তার ডাকেই পাড়াপ্রতিবেশীরা ছুটে আসে। শনিবার সন্ধ্যায় মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগরের কালীনগর গ্রামে। প্রতিবেশী আনারুল সরকার জানান, “মৃতের পাঁচ বছরের ছোট ভাই ইমন শেখ দাদাকে ঝুলতে দেখে নিজেই ফাঁস থেকে নামায়। তখনও রিমন বেঁচে ছিল। ছোট ভাই-ই তাকে নিচে নামিয়ে মাথায় মুখে জল দেয় ও বাতাস করে। তাতে দাদার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ছোট ভাই প্রতিবেশীদের ডাকে ও পুরো বিষয়টি জানায়।”

Advertisement

জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীরা ছুটে এসে রিমনের চিকিৎসার জন্য গোধনপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, জুনাইদের বাবা জিয়ারুল হক ঝালমুড়ির ব্যবসা করেন। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর সকালের দিকে রান্নাবান্না করে ছেলেদের খাইয়ে তিনি ঝালমুড়ি ফেরি করতে বের হন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আবার রান্নাবান্না করে ছেলেদের খাইয়ে কোনওমতে দিন গুজরান করছিলেন। সারাদিন ছেলেরা প্রতিবেশীদের ও কাকার বাড়িতে খেলাধুলা করে সময় কাটায়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কথা ছিল বাড়ি ফেরার, আগের রাতেই সহকর্মীর গুলিতে জখম CISF জওয়ান, উদ্বেগে পরিবার]

কাকা রাশিকুল মোল্লা বলেন, “পরপুরুষের সঙ্গে মায়ের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেনি জুনাইদ। মাঝে মধ্যেই বলত, ভাল লাগছে না। বেঁচে থাকতে ইচ্ছে হয় না। ছোট ভাই ইমনকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করত। আমরা অনেক বুঝিয়েছি, তখন শান্ত হত। এই বয়সের ছেলে যে এরকমভাবে আত্মহত্যা করবে বুঝতে পারিনি।” প্রতিবেশী কিশোরী সোমাইয়া খাতুন কথায়, “মাকে খুব ভালবাসত দুই ভাই। সেই মা তাদের ছেড়ে চলে যাওয়ায় খুব দুঃখ পেয়েছিল। মায়ের অভাব বোধ করত জুনাইদ। মনখারাপ করে ঘুরে বেড়াত। এসবের জন্যই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।”

রানিনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মিজান হাসান বলেন, “ঘটনাটা খুব বেদনাদায়ক। মায়ের কারণেই ছেলেটা আত্মহত্যা করেছে।” এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর মা ফরিদা বিবিকে জানানো হলেও দেখতে আসেননি। এমনকী পরিবারের লোকজনেরা গেলেও ফিরিয়ে দেন। মৃতের মেসোমশাই নমাজি শেখ জানান, “মায়ের একটা স্বাক্ষর পেলে হয়তো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ছেলেটাকে আর ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে কাটাছেঁড়া করতে হত না। কিন্তু পুলিশের কাছে এসে সেই সইটাও দিল না জুনাইদের মা।”

[আরও পড়ুন: আধুনিক যুগের ‘সহমরণ’! শোকে স্বামীর চিতার কাছেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী স্ত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ