ঘটনাস্থলের ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের দিন শুরুতেই বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারধর করা হয়েছিল। আর ভোট মিটতেই আক্রান্ত হলেন নদিয়ার এক বিজেপি কর্মী। তাঁর নাম বরুণ দাস। বৈরাগ্য সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার করিমপুর বিধানসভার অন্তর্গত হোগলবেরিয়া থানার হোগলবেরিয়া গ্রামে। পুলিশের সামনেই আক্রান্ত ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ি স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ভাঙচুর করে বলেও অভিযোগ উঠছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উলটে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীকেই থানায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিজেপি নেতারা গিয়ে তাঁকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হোগলবেরিয়া গ্রামে থাকা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছে বাড়ি বিজেপি কর্মী ও পেশায় কৃষক বরুণবাবুর। সোমবার নির্বাচন উপলক্ষে তাঁর বাড়ির উলটোদিকে বুথ অফিস বানিয়েছিল তৃণমূল। সেখানে সকাল থেকেই সাইকেল ও গাড়ি করে প্রচুর লোক এসেছিল। সবাই বুথের উলটো দিকে থাকা ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ির সামনেই সেগুলি দাঁড় করিয়ে রাখে। এর ফলে তাঁর বাড়ি ঢোকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে বারবারই তৃণমূল কর্মীদের আবেদন জানাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু, কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। সন্ধের পর মাঠের কাজ সেরে যখন বাড়ি ফিরছেন তখন ফের বাড়ির রাস্তা ঢোকার রাস্তা সাইকেল ও গাড়ি রাখার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছেন দেখেন। তখন তিনি কয়েকটা গাড়ি সরিয়ে রাস্তা বের করতে যান। এসময় আচমকা কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাঁর উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। পাশে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও কিছু বলেনি। ফলে ওই তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে মারধর করার পাশাপাশি বাড়িও ভাঙচুর করে। কিন্তু, পুলিশ উলটে বরুণবাবুকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
করিমপুর বিধানসভায় উপনির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। সোমবার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দশটা নাগাদ করিমপুরের সাহেবপাড়া এলাকায় পৌঁছতেই বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে উদ্দেশ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান তোলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাঁকে ঘিরে দীর্ঘক্ষণ চলে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর কুইক রেসপন্স টিম। তাঁদের সামনেও চলে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে এসডিপিও-এর নেতৃত্বে লাঠিচার্জ করা হয়। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
সাড়ে এগারোটা নাগাদ করিমপুরের ঘিয়াঘাট এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের আক্রমণের মুখে পড়েন বিজেপি প্রার্থী। রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয় জঙ্গলে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় আয়ত্তে আসে পরিস্থিতি। এই ঘটনার পরই শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন জয়প্রকাশ মজুমদার। অভিযোগ করেন, ‘শাসকদলের উদ্দেশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হওয়া। সেই কারণেই আমি বুথে যেতেই বাধার মুখে পড়তে হয়। বাধা দিয়ে কাজ না হওয়ায় আমাকে হেনস্তা করা হয়েছে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.