Advertisement
Advertisement
আত্মহত্যা

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমিকার নগ্ন ছবি পোস্ট যুবকের, অপমানে আত্মহত্যা তরুণীর

তরুণীর 'গুণধর' প্রেমিকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।

A college student committed suicide in Nadia's Dhantala

প্রতীকী ছবি।

Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 23, 2019 5:08 pm
  • Updated:December 23, 2019 5:08 pm

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দু’জনের আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে। কিন্তু সেই পরিচয় যে মৃত্যু ডেকে আনবে কে জানতো! ‘ফেসবুক বয়ফ্রেন্ড’-এর নোংরা কীর্তিকলাপের গলায় ওড়না দিয়ে আত্মহত্যা করল বছর উনিশের ছাত্রী সুস্মিতা সরকার। মৃত ছাত্রীর বাড়ি নদিয়ার পুরাতন চাপড়া এলাকায়। তরুণীর আত্মহত্যায় কাঠগড়ায় শুভজিৎ রায় ওরফে শুভেন্দু নামে তার গুণধর ‘বয়ফ্রেন্ড’। ধানতলা থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে বয়ফ্রেন্ডের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। পুলিশ তাকে খুঁজছে। শুভজিৎ নদিয়ার ঘোলা এলাকার বাসিন্দা। তবে উত্তরপ্রদেশে তার দিদির বাড়ি রয়েছে। মামার বাড়ি নেপাল সীমান্ত এলাকায়। অভিযুক্ত যুবক সেখানে পালিয়ে গিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

রানাঘাট কলেজের বিএ সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী সুস্মিতা। মাসছয়েক আগে শুভজিতের সঙ্গে ফেসবুকেই তার আলাপ। সেখানেই প্রেম নিবেদন করে শুভজিৎ। প্রস্তাবে সম্মতি জানায় সুস্মিতা। এরপর বারদুয়েক তাদের দেখা হয়েছে। তবে ফেসবুক চ্যাটেই বেশি কথা হত। হতভাগ্য বাবা জানিয়েছে, মেয়ের মুখ থেকে আমি ওর এই নতুন সম্পর্কের কথা শুনেছিলাম। বারণ করেছিলাম এই ছেলেটির সঙ্গে ফেসবুকে সম্পর্ক রাখতে। কিন্তু ও আমাদের কথা শোনেনি। অভিযোগ, ভালোবাসার ছলনা করে প্রায়ই শুভজিৎ মেয়েটিকে নিজের বিবস্ত্র ছবি তুলে পাঠাতে বলতো। দিনের পর দিন নিজের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে প্রেমিককে পাঠাতো মেয়েটি। কিন্তু গন্ডগোল বাধে কিছুদিনের মধ্যেই। ডিসেম্বরের গোড়ায় মেয়েটির কিছু বন্ধু জানায় ফেসবুকে তার কিছু আপত্তিকর ছবি আপলোড করা হয়েছে। বন্ধুদের মুখে এমন কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যায় সুস্মিতা। ফেসবুক ঘেঁটে আবিষ্কার করে তার নামে ফেক প্রোফাইল খোলা হয়েছে। যে ছবিগুলো সে শুভজিৎকে পাঠাতো, সেইসব গোপন মুহূর্তের ছবি আপলোড করে দেওয়া হয়েছে ওই প্রোফাইলে। অভিযোগ, শুভজিৎকে সে কথা জানাতেই সে এড়িয়ে যেতে শুরু করে। ফোন করলেও ধরছিল না। এদিকে নিজের বিবস্ত্র ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এসে যাওয়ায় লজ্জায় কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দেয় সুস্মিতা।

[আরও পড়ুন: শীতঘুমের বালাই নেই, গর্ত থেকে বেরিয়ে ‘রোদ পোহাচ্ছে’ চন্দ্রবোড়ারা]

তাঁর বাবা বিমল সরকার জানিয়েছেন, মেয়ে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়েছিল। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম গুরুতর কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু ও লজ্জায় আমাদেরও বলতে পারছিল না। রবিবার সকালে বাজারে গিয়েছিলেন বিমলবাবু। সে সময় পড়শিদের বাড়িতে গিয়েছিলেন সুস্মিতার মা-ও। বাজার থেকে ফিরে বিমলবাবু দেখেন রান্নাঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আন্দাজ করেছিলেন কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে। অনেক ডাকাডাকিতেও বন্ধ রান্নাঘর থেকে কেউ সাড়া দেয়নি। অবশেষে দরজা ভেঙে দেখা যায় রান্নাঘরের সিলিং থেকে ঝুলছে সুস্মিতার দেহ। তড়িঘড়ি তাঁকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় ধানতলা থানায় অভিযোগ করেছেন সুস্মিতার বাবা। তাঁর কথায়, “আমার মেয়ের নোংরা ছবি ফেসবুকে দেওয়াতেই আজ এত বড় সর্বনাশ হল। এই ছেলেটিই আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। ওর চূড়ান্ত শাস্তি চাই। আমার যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ছেলেটি যেন পার না পায়।”

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ