চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ভিনরাজ্যে পড়তে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ছেলে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে, বাঁচার আর কোনও আশা নেই। একমাত্র সন্তানের হার্ট, কিডনি, চোখ ও লিভার দান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রানিগঞ্জের এক দম্পতি।
[আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে উদ্ধার নববধূর ঝুলন্ত দেহ, খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার সিভিক ভলান্টিয়ার]
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিসিসিএলে চাকরি করেন সোমনাথ ঘোষ, আর তাঁর স্ত্রী চন্দনাদেবী নার্স। রানিগঞ্জের বল্লভপুরে থাকেন ওই দম্পতি। ২০১৮ সালে তামিলনাড়ুর ভেলোরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভরতি হন তাঁদের একমাত্র ছেলে সৌরনীল। ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার কথা ছিল তাঁর। গত শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে চেপে তিরুবনন্তপুরম যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন সৌরনীল। প্রথমে তাঁকে ভরতি করা হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। সোমনাথবাবু ও তাঁর স্ত্রী পৌঁছানোর পর, সৌরনীলকে ভেলোরের একটি নামী হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে শুকিয়ে গিয়েছে সৌরনীলের শরীরের নিচের অংশ টিস্যুগুলি। বাইরে থেকে রক্ত দিয়েও পরিস্থিতি আর সামাল দেওয়া যায়নি। কোমায় চলে যান ওই যুবক। শেষপর্যন্ত সৌরনীলকে ‘ব্রেন ডেড’ বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
সৌরনীলের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণার পরই একমাত্র ছেলের হার্ট, কিডনি, চোখ ও লিভার দান করার সিদ্ধান্ত নেন সন্তানহারা দম্পতি। পরিবারের অনুরোধেই রাতারাতি রোগীর অঙ্গদানের ব্যবস্থা করে ভেলোরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবারই অঙ্গদানের প্রক্রিয়া শেষ হয়। এখনও যা খবর, একমাত্র ছেলের অঙ্গদান করে বৃহস্পতিবার প্লেনে রানিগঞ্জ ফিরছেন সোমনাথ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী চন্দনাদেবী।
প্রসঙ্গত কয়েক দিন আগে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন এক শিশু। সদ্যোজাত সন্তানের কর্নিয়া দান করার সিদ্ধান নেন শিশুটির বাবা-মা।
দেখুন ভিডিও: