ধীমান রায়, কাটোয়া: মদ্যপ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করছিলেন এক যুবক। কিন্তু প্রতিবেশী ভেবেছিলেন তাঁর পরিবারের মহিলাদের উদ্দেশে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করেছে ওই যুবক। সেই সন্দেহের বশে মদ্যপ যুবককে ব্যাপক মারধর করল প্রতিবেশীরা। তার জেরে মৃত্যু হল ওই যুবকের। মর্মান্তিক এই ঘটনায় উত্তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার ১২ নম্বর ওয়ার্ড। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বীরভূমের বোলপুরের জামবনির বাসিন্দা কাজু তুড়ি শ্বশুরবাড়ি গুসকরার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের ধারাপাড়ায় কাজুর শ্যালিকার বাড়ি। সোমবার শ্যালিকার বাড়িতে কালীপুজো উপলক্ষে তিনি তাঁর স্ত্রী দুর্গা ও দুই সন্তান রাহুল এবং পরীকে নিয়ে গুসকরায় যান। শ্যালিকার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া সেরে কাজু, তাঁর স্ত্রী এবং শ্যালিকা খয়রাপাড়ায় চলে যান। কাজুর স্ত্রী দুর্গা বলেন, “আমার স্বামী পুজো উপলক্ষে মদ্যপান করেছিল। বাড়িতে ফেরার পর ফের আমার স্বামী ধারাপাড়ায় যেতে চাইছিলেন। আমি ও আমার বোন পূজা বাধা দিচ্ছিলাম। স্বামী জোর করে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলে তাঁকে ফেরানোর চেষ্টা করছিলাম। তখনই আমার বাপেরবাড়ির পাশের বাড়িতে মণিকা দুবে নামে এক গৃহবধূ তাঁদের সদর দরজা লাগাতে আসেন। সেই সময় আমার স্বামী আমাকে গালিগালাজ করছিল। কিন্তু মণিকা মনে করেন আমার স্বামী ওকে গালি দিচ্ছেন। তখন ওই বাড়ির সদস্য সোনু, মনু, ভনু বেড়িয়ে আসে। আমার স্বামীকে ব্যাপক মারধর করতে থাকে। আমরা বাধা দিতে গেলেও আটকাতে পারিনি। তারপর আমার স্বামীকে তুলে ঘরে নিয়ে যাই।”
জখম অবস্থায় ঘরে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন কাজু। তড়িঘড়ি গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। এই ঘটনায় মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ভনু, মনু ও তাদের বাবা দয়াশংকর দুবেকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত সোনু দুবে এলাকাছাড়া।
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.