Advertisement
Advertisement

Breaking News

ময়নাতদন্ত

লাশকাটা ঘরে কাটাছেঁড়ায় সাহায্য করতেন, সেই ভাইয়েরই ময়নাতদন্তে অঝোরে কান্না দাদার

'প্রিয়জনের মৃতদেহ কাটাছেঁড়া করলে কতটা কষ্ট হয় বুঝতে পারছি', মন্তব্য শোকাতুর দাদার।

A man died in a road accident in Kharagpur
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 12, 2020 7:52 pm
  • Updated:July 12, 2020 7:52 pm

অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: ছোট ভাই। সে বড়দাদার কাছে বড়ই স্নেহের। তার উপর আবার কর্মস্থলও দু’জনের একই। তাই জীবনের প্রায় মুহূর্তে ভাই-দাদা দু’জনেই ছিলেন একেবারে কাছাকাছি। পেশাগত কিংবা পারিবারিক সমস্যায় তাঁরা ছিলেন একে অপরের ভরসা। দু’জনেরই কাজ লাশকাটা ঘরে। একদিনে যে ঘরে অন্যের প্রিয়জনের দেহ ময়নাতদন্ত করতে সাহায্য করেছে, আজ ভাইয়েরই দেহ শায়িত সেই ঘরে। এ দৃশ্য দেখে চোখের জলে ভাসলেন দাদা। আপনজনের মৃত্যুর কথা মেনে নেওয়া যে বড়ই কঠিন তা যেন আরও একবার বুঝতে পারলেন তিনি। 

ঠিক কী হয়েছিল? শনিবার দুপুরে মকরামপুরের দিক থেকে বাইক চালিয়ে খড়গপুরে (Kharagpur) ফিরছিলেন নুরু ওরফে দীপক নায়েক। তখন ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের একই লেনে একটি লরি ঢুকে পড়ে। বাইক ও লরির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। নারায়ণগড় থানার রামপুরা টোল প্লাজার কাছে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সন্ধেয় তাঁর মৃতদেহ খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসা হয়। আর রবিবার দুপুরে হয় ময়নাতদন্ত। কিন্তু ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে হাত কেঁপে গেল মৃতের বড়দা গৌতম নায়েকের।   

Advertisement

[আরও পড়ুন: এ কেমন বাবা! লকডাউনে রোজগার বন্ধ থাকায় ছেলে ও বউমাকে ঘরছাড়া করলেন বৃদ্ধ]

জীবনে কয়েকশো অপঘাতে মৃত্যুর ময়নাতদন্তের কাজ করেছেন গৌতম। তাঁর সহযোগী ছিল ভাই নুরু। মৃতদেহ কাটাছেঁড়া করা ও দেখা দু’জনের কাছে জলভাত ছিল। অনেক পরিচিত মানুষের মৃতদেহ লাশঘরে কাটাছেঁড়া করেছেন। কিন্তু কোনও অনুভূতি হত না। এক ফোঁটা চোখের জল কোনওদিন কারোর জন্য পড়েনি। কিন্তু গৌতমবাবু কী কোনওদিন ভাবতে পারেননি তাঁর সহযোগী নুরুই একদিন শুয়ে থাকবে লাশঘরে। আর তাঁর মৃতদেহ এই লাশঘরে কাটাছেঁড়া করা হবে।

Advertisement

গৌতমবাবুর কান্না দেখে অবাক হয়ে যান তাঁর সহকর্মীরা। কান্নার কারণ জানার পর আর লাশঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। গৌতমের পরিবর্তে  অটোপসি সার্জেনের সঙ্গে ছিলেন ওই বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ইনচার্জ সুনীল ঘোড়ই। তিনি বলেন, “গৌতমবাবুকে লাশঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভাইয়ের মৃতদেহ যখন কাটাছেঁড়া হচ্ছে তখন তিনি মর্গের লাশঘর লাগোয়া অফিসে বসে কেঁদে ভাসাচ্ছেন। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। শুধু মুখে বলছেন প্রিয়জনের মৃতদেহ কাটাছেঁড়া করা হলে কতটা কষ্ট হয় সেটা আজ বুঝতে পারছি।” ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ও। 

[আরও পড়ুন: ১০০ দিনের কাজের মজুরি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ