সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কাশ্মীরের ডাল লেকের রোম্যান্টিসিজম এবার পুরুলিয়ায়! একেবারে ভূ-স্বর্গের ছোঁয়ায় শহর পুরুলিয়ার প্রস্তাবিত জাতীয় সরোবর সাহেব বাঁধে মিলবে শিকারাতে চড়ার অনুভূতি। শুক্রবার ভোরেই সুদূর কাশ্মীর থেকে সাহেব বাঁধের জলে নামে এই তিনটি শিকারা। চলতি মাসের ১১ তারিখ এই শিকারার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো।
[ডোমকলে নৌকাডুবিতে এক মহিলা-সহ দুই শিশুর দেহ উদ্ধার]
কাশ্মীরের একটি কোম্পানির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই কাজ করছে পুরুলিয়া পুরসভা। এই সরোবরের বিজ্ঞান কেন্দ্র লাগোয়া এলাকায় এখন শিকারা পয়েন্টের কাজ চলছে জোরকদমে। এই শিকারা পয়েন্টেকে সাজানো হচ্ছে একেবারে ডাল লেকের ওই ক্যাম্পের মতোই। জরবিন বেলুন থেকে শুরু করে কাশ্মীরি পোশাক-সহ থাকছে সব কিছুই। আগামিদিনে এই শিকারা পয়েন্টে তৈরি করা হবে ক্যাফেটেরিয়াও। সেখান থেকে সাহেব বাঁধের বিস্তীর্ন জলরাশি ও পরিযায়ী পাখি দেখার সুযোগ করে দেবে পুরসভা। তাছাড়া পুরসভা চায় সাহেব বাঁধকে ঘিরে থাকা ফেভারস ব্লকে হর্স, এলিফ্যান্ট রাইডিং-সহ বাগ্গি গাড়ি চালু করতে। পর্যটনের জেলা পুরুলিয়ার সদর শহরকে ট্যুরিস্ট লুক দিতেই পুরুলিয়া পুরসভা এই উদ্যোগ নিয়েছে। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান শামিম দাদ খান বলেন, “এই জেলা জুড়ে রয়েছে একাধিক পর্যটনক্ষেত্র। তাই রাজ্য সরকার চাইছে এই জেলার সদর শহর পুরুলিয়াকে পর্যটনের শহর হিসাবে গড়ে তুলতে। যাতে এই শহরেও পর্যটক কে টানা যায়। তাই আমরা শহর কে সাজাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছি। সাহেববাঁধে শিকারা নামানো সেই কাজেরই অঙ্গ।” এদিন একেবারে সাতসকালে এই জলাশয়ে শিকারার ট্রায়াল হয়। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আয়ও বাড়াতে চায় পুরুলিয়া পুরসভা।
[ভিড়ে ঠাসা দিঘার সৈকতে ডলফিনের দেহ, সেলফি তোলার হিড়িক পর্যটকদের]
১৮৮৪ সালে কর্নেল টিকলে পুরুলিয়ার জেলের কয়েদীদের দিয়ে এই সরোবর খনন করান। তাই এই জলাশয়ের নাম সাহেববাঁধ। তবে আরও একটি নামও রয়েছে নিবারন সায়ের। বর্তমানে শহরের মাঝখানে একেবারে বনজ লাবন্য নিয়ে যেন শুয়ে রয়েছে এই জলাশয়। তাই রুখাশুখা পুরুলিয়ায় এই সরোবর চোখ টানে সকলের। শিকারার হাত ধরে এই জলাশয় যেন এক খণ্ড কাশ্মীরের ডাল লেককেই মনে করাচ্ছে। আসলে সাহেববাঁধে সেইরকম আবহই তৈরি করে দিচ্ছে পুরসভা। একেবারে কাশ্মীরি কাপড়ে মোড়া গদিতে এক ঘন্টার জন্য শিকারাতে চড়ার ভাড়া রাখা হয়েছে পাঁচশো টাকা। তিরিশ মিনিটে তিনশো টাকা। এক একটি শিকারায় পাঁচ জন করে বসতে পারবেন। ডাল লেকের মত এই শিকারা চালাবেন কাশ্মীরিরাই।
[হেরিটেজ আর্ট গ্যালারি হবে ডুরান্ড হল, পর্যটন কেন্দ্রের ভাবনা রেলের]
ছবি: সুনীতা সিং