রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে জেলা পুলিশের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। রবিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত কনস্টেবল দীপঙ্কর সরকার, আলিপুরদুয়ার লাগোয়া নর্থ পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা। জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে পুলিশ কর্মীদের বেতনের বিল তৈরি করার কাজে নিযুক্ত ছিল সে। সেই সুযোগে ওই কনস্টেবল আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় পুলিশমহলে জোর হইচই।
প্রতি মাসে জেলা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতনের তালিকা করে ট্রেজারি অফিসে জমা দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন দীপঙ্কর। জেলায় প্রতি মাসে কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার অনুপস্থিত থাকতেন। আইন অনুযায়ী, অনুপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতনের বিল করার কথা নয়। কিন্তু দীপঙ্কর সেই সব অনুপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নামেও বিল করে পাঠিয়ে দিতেন।
অনুপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নামের পাশে নিজের আত্মীয়স্বজনদের অ্যাকাউন্ট নম্বর ট্রেজারি অফিসে পাঠিয়ে দিতেন দীপঙ্কর। ফলে অনুপস্থিত সিভিক ভলান্টিয়ারদের নামেও বেতন চলে আসত দীপঙ্করের আত্মীয়স্বজনদের অ্যাকাউন্টে। এভাবে ঘুরপথে প্রতি মাসে সরকারি অর্থ দীপঙ্কর পেতেন। দীর্ঘ চার-পাঁচ বছর থেকে দীপঙ্কর এই দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
কিন্তু হঠাৎ করে কীভাবে এই দুর্নীতি নজরে আসে জেলা পুলিশের? জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কোচবিহার জেলায় এমন একটি দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। তার পরে আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন দুর্নীতির ঘটনা নজরে পড়ে পুলিশের। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “আমরা তদন্ত শুরু করেছি। কনস্টেবল দীপঙ্কর সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে গত চার-পাঁচ বছরে প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে ওই পুলিশকর্মী। অফিসের সফটওয়্যারে অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে এই দুর্নীতি করেছে সে।”
কিন্তু সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতনের তালিকায় কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাক্ষর নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “সই করার সময় বিষয়টি আমাদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে। আসলে গুনে গুনে কে উপস্থিত আর কে অনুপস্থিত বিল সই করার সময় সেটা খতিয়ে দেখা কার্যত অসম্ভব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.