Advertisement
Advertisement

Breaking News

রক্তদান

রোজা ভেঙে রক্তদান, যমে-মানুষের লড়াইয়ের ময়দানে রাখির প্রাণদাতা ওসমান

ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবতা৷

A youth breaks roza to donate blood for hindu girl in Krishnanagar
Published by: Sayani Sen
  • Posted:June 1, 2019 8:22 pm
  • Updated:June 1, 2019 8:24 pm

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: জাতপাত, ধর্মীয় গোঁড়ামির বেড়াজাল ভেঙে ভারত ধর্ম নিরপেক্ষতার বার্তা দেয়৷ সেটাই আমাদের দেশের ঐতিহ্য৷ অথচ বর্তমানে প্রায়ই কানে আসে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার খবর৷ তবে বিচ্ছিন্ন ঘটনা যে ভারতের আসল পরিচয় নয়, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে দিলেন এক মুসলমান যুবক৷ রোজা ভেঙে হিন্দু কিশোরীকে রক্ত দিলেন তিনি৷ সংকটের মাঝে রক্ত পেয়েই আপাতত সুস্থ হয়ে উঠেছেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রাখি৷

[ আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল]

রাখি দাস নামে ওই কিশোরী নদিয়ার কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে ভরতি৷ মাত্র ছমাস বয়সে থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়ে তার৷ মাঝে কেটে গিয়েছে সাড়ে নবছর৷ একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে আজও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মা তাপসী এবং বাবা গৌতম৷ প্রচণ্ড গরমে হাসপাতালে দেখা দিয়েছে রক্তের অভাব৷ তাই গত তিনদিন ধরে হাজার ঘুরেও রক্ত পাচ্ছেন না কেউ৷ সেই সমস্যায় ভুক্তভোগী রাখির বাবা-মাও৷ বাধ্য হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়ের রক্তদাতা খুঁজতে শুরু করেন৷ সেখানেই কুলবেড়িয়ার বাসিন্দা ওসমান গনি শেখের সঙ্গে যোগাযোগ হয় রাখির বাবা-মায়ের৷ পলাশী থেকে পরিবার নিয়ে কৃষ্ণনগরে ইদের বাজার করতে এসেছিলেন ওই যুবক। রাখিকে বাঁচানোর জন্য ওসমান ইদের বাজার ফেলে রেখে ছুটে যান কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে নিজে রাখির জন্য রক্তদান করেন। এরপর সেই রক্ত নিয়ে গিয়ে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখির শরীরে দেওয়া হয়। আর এভাবেই ওসমানের রক্তে প্রাণ বাঁচল রাখির৷

Advertisement

[ আরও পড়ুন: বেড়াতে গিয়ে বিপত্তি, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত বাবা-ছেলে]

রাখির মা তাপসী বলেন, ‘‘জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে মুসলিম ওই যুবক নিজে থেকে এগিয়ে এসে রক্তদান করে আমার মেয়ের যেভাবে জীবন রক্ষা করলেন, তা আমরা কোনদিনও ভুলব না। এমন মহৎ কাজ কজনই বা করতে পারেন। আমরা তো অনেকেই জানি হিন্দু-মুসলিম সবার রক্ত সমান। তবুও জাতপাতের বেড়াজাল রয়েই গিয়েছে। রোজা ভেঙে ওই যুবক রক্তদান করে আমার মেয়েকে নতুন জীবন দিয়েছেন। সারা জীবন ওঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।’’ অবশ্য ওসমান গনি শেখের বক্তব্য, ‘‘আমাদের ধর্মেও আছে, মানুষের জীবনের মূল্য সবার আগে। আমিও তাই মানি। আল্লাহর দোয়া থাকলে রোজা তো আমি পরেও করতে পারব। কিন্তু জীবন চলে গেলে তো আর জীবন ফিরে পাওয়া যাবে না৷ তাই রোজা ভেঙে রক্ত দিয়ে আমি আমার এক বোনের জীবন বাঁচানোর জন্য পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, এ আর এমন কী কথা।’’ ওসমানের রক্তে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ রাখি৷ আপাতত বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে দিব্যি সময় কাটাচ্ছে সে৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ