সৌরভ মাজি, বর্ধমান: মাস কয়েকের মধ্যে ফের বিপর্যয় বর্ধমান স্টেশনে। আবার পোর্টিকোর ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে আহত হলেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। পোর্টিকোর নিচে অস্থায়ীভাবে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ফলে আরও বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার আশঙ্কা। এই বিপর্যয়ের পরও রেল আধিকারিকদের দেখা নেই বলে ক্ষোভ বাড়ছে আশেপাশের বাসিন্দাদের।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের স্মৃতি ফিরল বর্ধমান স্টেশনে। ৪ জানুয়ারি, সন্ধেবেলা বর্ধমান স্টেশনের এই পোর্টিকোর অংশই ভেঙে পড়েছিল। একজনের মৃত্যু হয়েছিল, আহতে হয়েছিলেন ১ জন। তারপর বেশ কয়েকদিন বর্ধমান স্টেশনের একটা অংশে যাতায়াত বন্ধ ছিল। এই ঘটনা বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছিল রাজ্যে। দুর্ঘটনার প্রায় দু মাস পর নতুন ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছিল। কাজ শেষের পর ফের স্বাভাবিকভাবে চালু হয় রোজকার যাতায়াত। তবে সদ্য লকডাউন ওঠায় এখনও সেভাবে মানুষজনের যাতায়াত শুরু হয়নি এই স্টেশনে। নাহলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা।
কিন্তু তারপর কয়েকদিন কাটতে না কাটতেই ফের একই ধরনের বিপর্যয়। রবিবার সকালে পোর্টিকোর নতুন অংশের ফলস সিলিং ভেঙে গুরুতর আহত হলেন পরিযায়ী শ্রমিক। চাঙড় ভেঙে পড়ে তাঁর মাথায়। তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। মনে করা হচ্ছে, ফলস সিলিংয়ে জল জমার ফলেই তা এভাবে ভেঙে পড়েছে। এই সময়ে বর্ধমান স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতায়াত করছেন। এখানেই তাঁদের কয়েকজন রয়েছেন। ফলে আহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা। পূর্ব রেলের তরফে ঘটনাস্থলে আধিকারিকদের যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফলস সিলিং ভেঙে পড়ার খবর পৌঁছলেও প্রথমে বিশেষ গুরুত্ব দিতে রাজি হননি আধিকারিকরা। পরে যখন শ্রমিক আহত হওয়ার খবর দেওয়া হয়, তখন নড়েচড়ে বসেন তাঁরা। তবে ঘটনাস্থলে যেতে বেশ বিলম্ব হয়েছে তাঁদের। ফলে রেলের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠছে সাধারণ মানুষজনের। যদিও পূর্ব রেলের ডিআরএম-এর দাবি, দুর্ঘটনা তেমন বড় কিছু নয়। তাহলে কি বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কাকে তেমন আমল দিচ্ছে না রেল? যে সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো হয়েছে, তাদের দক্ষতা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠছে।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, ”আমরা অনেকবার রেলকে বলেছি, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। কিন্তু একজনের ঘাড়ে যদি এতগুলো দপ্তরের দায়িত্ব থাকে, তাহলে তো এই অবস্থাই হবে। রেলের মত একটা গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর, যার আলাদা বাজেট ও নেই। রেল নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে। এর জন্য পুরোপুরি কেন্দ্র দায়ী।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.