দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: কলকাতায় একের পর এক এটিএম জালিয়াতি ঘিরে আতঙ্কিত মানুষজন। তবে এই আতঙ্ক শুধুই কলকাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রইল না। গভীর রাতে হিন্দমোটরের উদয়ন পল্লির বাসিন্দা কিংশুক করের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আন্তর্জাতিক স্তরে ট্রানজাকশানের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। এই ঘটনায় আতঙ্কিত কিংশুকবাবু উত্তরপাড়া থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হিন্দমোটরের কিংশুকবাবু ২০১০ সালে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে মার্কিন এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজে যোগ দেন। সংস্থার সব কর্মীর স্যালারি অ্যাকাউন্ট পুনের সিটি ব্যাংকে। কিংশুকবাবু জানান, ৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে ব্যাংকের ফ্রড ডিটেকশন টিম তাঁকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করে যে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও টাকা লেনদেন করেছেন কি না। তারা এই তথ্যও দেন যে কিংশুকবাবুর অ্যাকাউন্ট থেকে ইতিমধ্যে দু’বারে ৪০ হাজার টাকা বেজিংয়ের একটি সংস্থার ভাঁড়ারে গিয়েছে। যদি কিংশুকবাবু নিজে অনলাইনে এই টাকা লেনদেন না করে থাকেন, তাহলে তাঁর অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
[ আরও পড়ুন: ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া, অর্জুন সিংয়ের বিধায়ক পুত্রকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি]
গভীর রাতে হঠাৎ এই ফোন পেয়ে কিংশুকবাবুর মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের মেসেজ বক্স খুলে দেখেন, রাত ১২ টা ১৯ মিনিটে ও ১২ টা ২০ মিনিটে দুই বারে প্রতারকরা ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি এরপরই ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেন। যেহেতু আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনও ওটিপি লাগে না, তাই প্রতারকরা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে প্রতারণা করে টাকা তুলতে পারে।
কিংশুকবাবুর ধারণা, দেশের মাটিতে বসেই প্রতারকরা বিদেশের এই প্রতারণা চক্রের সাথে যোগাযোগ রেখে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কিত তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর বক্তব্য, ঘরে টাকা রাখলেও বিপদ, ব্যাংকে টাকা রেখেও নিরাপত্তা নেই। কারণ, সেখানে পৌঁছে গেছে প্রতারকদের লম্বা হাত। তাহলে সঞ্চয়ের উপায় কী? এই প্রশ্নই তুলছেন তিনি। উত্তরপাড়া পুলিশ সাইবার ক্রাইম থানার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।