শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: করোনা ভাইরাসের বলি হয়েছিলেন কালিম্পংয়ের এক মহিলা। উত্তরবঙ্গে সেটাই ছিল প্রথম মৃত্যু। আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। চিকিৎসার পর তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠলে দফায় দফায় তাঁদের বাড়ি ফেরানো হয়। এবার ওই পরিবারের এক শিশু-সহ চারজন সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরায় গোটা পরিবারে খুশির হাওয়া। সকলেই যে করোনা যুদ্ধ জয় করে ফিরেছেন!
এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে কালিম্পংয়ের বছর পঁয়তাল্লিশের মহিলার মৃত্যু হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বেঙ্গালুরু থেকে তিনি ফিরে শিলিগুড়িতে ভাইয়ের কাছে ছিলেন। তারপর কালিম্পং ফেরার দু দিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁর কালিম্পংয়ের বাড়ির সকলকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তাঁর স্বামী, ছেলেমেয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, COVID-19 পজিটিভ। শিলিগুড়িতে যে পরিবারে তিনি কয়েকদিন কাটিয়েছিলেন, তাঁদেরও কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁরাও করোনায় আক্রান্ত। এরপর তাঁদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসোলেশন ভরতি করে শুরু হয় চিকিৎসা। সবমিলিয়ে, এই পরিবারের ১০জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
[আরও পডুন: করোনা আক্রান্ত সন্দেহে একঘরে করল গ্রামবাসী, প্রশাসনের দ্বারস্থ অসহায় পরিবার]
শুক্রবার ওই পরিবারের এক শিশু-সহ চার সদস্য সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন এবং তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য দপ্তর। তাদের মধ্যে রয়েছেন মৃতার ভাইয়ের স্ত্রী ছেলে এবং মেয়ে। প্রত্যেকে শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরের বাসিন্দা। পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়া তিন বছরের শিশুটি কালিম্পংয়ের মৃতার আরেক ভাইঝি। এদিন তাকেও কালিম্পংয়ে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এঁরা সকলে করোনা চিকিৎসার জন্য অধিগৃহীত শিলিগুড়ি সংলগ্ন মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে ভরতি ছিলেন। এর আগে দু’দফায় ৬ জনকে ছাড়া হয়েছিল। আজ ছাড়া পেলেন চারজন। সবাইকে এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পডুন: করোনা মোকাবিলায় শ্রেষ্ঠ কর্মীদের ‘কোভিড হিরো’ পুরস্কার দেবে তেহট্টের ব্লক প্রশাসন]
এখন ওই হাসপাতালে আরও চার জন করোনায় সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দুই নার্স এবং এক নার্সের মা ও স্বামী সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, “কালিম্পংয়ের মৃতা মহিলার পরিবারের সব সদস্য সেরে উঠেছেন। প্রত্যেকে এখন সুস্থ।”