সৌরভ মাজি, বর্ধমান: হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মানে সবথেকে বেশি চাপ। সারা দিন রোগীর ভিড়। রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা এবার দূর হতে চলেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আধুনিক দূষণহীন ইকো-রিকশ অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হল।
[‘চালককে কান থেকে ফোন সরাতে বলেছিলাম, একবার যদি কথাটা শুনত!’]
আগে স্ট্রেচার থাকলেও কর্মীর অভাবে তা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সমস্যা হত। রোগীর পরিজনদেরই কোলে-পিঠে করে অসুস্থকে নিয়ে যেত হত বিভিন্ন ওয়ার্ডে। রক্ত-মল-মূত্র পরীক্ষা বা এক্স-রে, ইসিজি-সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে নিয়ে যেতেও সমস্যা হত স্ট্রেচারের অভাবে। এবার ইকো-রিকশ অ্যাম্বুল্যান্সে করেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের নিয়ে যাওয়া হবে। সোমবার বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে ইকো-রিকশ অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি তুলে দেন। এই যানের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেবা’। তাঁর বিধায়ক তহবিলের ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে এই ইকো-অ্যাম্বুল্যান্স কেনা হয়েছে। রবিরঞ্জনবাবু বলেন, “এর আগে হাসপাতালে ইকো ফ্রেন্ডলি শববাহী গাড়ি হয়েছে হাসপাতাল থেকে মর্গে মৃতদেহ পরিবহণের জন্য। এবার জরুরি বিভাগ থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের নিয়ে যাওয়া জন্য ইকো অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হল। হাসপাতালের পরিষেবা উন্নয়নে ও সাধারণ মানুষের স্বার্থে আরও সহায়তা করা হবে হাসপাতালকে।”
[ঘুমের ‘কোটা’ পূর্ণ হয়নি চালকের, চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ল ট্রেন]
হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ড্যান্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল (এমএসভিপি) উৎপল দাঁ জানান, হাসপাতালে স্ট্রেচারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের ভর্তির পর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এই ইকো-অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ায় তা অনকটা দূর হবে। হাসপাতালে বিশাল ক্যাম্পাস। সেখানে এক-একটি ওয়ার্ডের মধ্যে দূরত্বও যথেষ্ট। আবার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে হয়। সেক্ষেত্রেও পরিবহণে একটা সমস্যা হয়। ইকো-অ্যাম্বুল্যান্স থাকায় সেই সমস্যা মিটবে। উৎপলবাবুর সংযোজ, “আমাদের সুপারস্পেশালিটি উইং অনাময় হাসপাতাল। সেখানেও একটি ইকো-অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন রয়েছে। মূল হাসপাতালে আরও একটি ইকো-অ্যাম্বুল্যান্স পেলে আরও সুবিধা হবে।” এই ব্যাপারে বিধায়ককে হাসপাতালের তরফে প্রস্তাবও দেওয়া হবে যাতে বিধায়ক তহবিল থেকে তার ব্যবস্থা করা হয়।
[বিক্ষিপ্ত অশান্তি, উপনির্বাচন শেষ হল কার্যত শান্তিতে]
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুধুমাত্র পূর্ব বর্ধমানই নয়, পাশের পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া এমনকী ঝাড়খণ্ড-বিহার থেকেও রোগী আসে। গড়ে প্রতিদিন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পান এখানে। রোগীর চাপ থাকায় স্ট্রেচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এমএসভিপি জানান, নতুন পাওয়া ইকো-অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া গেলেও তার পরিষেবা চালু করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। ফেব্রুয়ারি মাসে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পর তা চালু করা হবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ইকো অ্যাম্বুল্যান্স চালু করতে চালকের প্রয়োজন। তার ব্যবস্থা করে তারপর এই পরিষেবা কয়েক দিনের মধ্যে চালু করা যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.