Advertisement
Advertisement

Breaking News

সুন্দরবনে বাঘ আটকানো

আমফানে জাল ছিঁড়েছে, সুন্দরবনে বাঘ আটকাতে ঘুমপাড়ানি বন্দুক নিয়ে রাত জাগছেন বনরক্ষীরা

আজ গোটা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সুন্দরবনে যাচ্ছেন খোদ বনমন্ত্রী।

Amfan effect, forest department deploys to stop tiger attack in Sundarban
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:June 3, 2020 9:18 am
  • Updated:May 15, 2021 11:19 am

কৃষ্ণকুমার দাস : হাতে ঘুমপাড়ানি বন্দুক। সঙ্গে সহকর্মীদের হাতে ডবল ব্যারেল রাইফেলও। তবু ঘুম নেই সুন্দরবনের ১০টি বোটে থাকা বনরক্ষীদের। রাতের অন্ধকারের বুক চিরে কখন কোন দিক দিয়ে যে দক্ষিণরায়ের বাহন ঝাঁপিয়ে পড়বে তার ঠিক নেই! এতদিন খাড়িপথের ডিউটিতে ভয় ছিল না। নাইলনের জালের যে দীর্ঘ প্রাচীর আটকে দিত ওদের, তার সিংহভাগই উড়ে গিয়েছে আমফানের ১৮৫ কিমির গতিবেগের টানে। সুন্দরবনে লোকালয়ের সঙ্গে বাঘেদের বিচারণভূমির মাঝের সেই নাইলনের প্রাচীর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকারও। বাঘের ভয় রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়েছে সুন্দরবনবাসীদের, দিনের কাজ পন্ড সুন্দরবনের সিংহভাগ মানুষের। বস্তুত এই কারণেই রয়্যাল বেঙ্গলের হানা আটকাতে ১০টি বোট নামিয়ে রাতপাহারা দিচ্ছে বনদপ্তর।

টাইগার প্রোজেক্টের অধীন চারটি বিটে রাইফেলার সঙ্গে ‘ট্রাঙ্কুলাইজার গান’ নিয়ে বনরক্ষীরা ঘুরছেন। প্রতিটি বোটে দু’টি করে বিশেষ সার্চলাইট দেওয়া হয়েছে। এই লাইটের আলো প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত দেখা যাবে। রাতেই বাঘের চলাচলের উপর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন টাইগার প্রোজেক্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত রবিকান্ত শর্মা। দিনে-রাতে রয়্যাল বেঙ্গল অবাধে ঘুরে বেড়ায় সুন্দরবনের সজনেখালি, ঝিলা, বাঘনা ও বিদ্যা বিটগুলিতে। এছাড়া হরিখালি, নবাঁকি, হলদিবাড়ি, নেতিধোপানির খাড়িপথেও বনরক্ষীরা ঘুরছেন, তবে সেটা তুলনামূলকভাবে কম। কারণ, ওই এলাকায় বাঘেদের যেমন চলাফেরা খুবই কম, তেমনই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দীর্ঘ নাইলনের প্রাচীর অনেকটাই পুণরুদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা।

Advertisement

টাইগার প্রজেক্টের ৪টি বিটে জালহীন পথে যদি একবার লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ে? এই বিষয়েই উদ্বিগ্ন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ঝড়ের পরদিন থেকেই দশটি বোট নামিয়ে রাতপাহারার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বুধবার গোটা পরিস্থিতি সরজমিনে দেখতে সুন্দরবনে যাচ্ছেন স্বয়ং বনমন্ত্রী। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “যতদিন না পুরো নাইলনের প্রাচীর মেরামত হবে ততদিন বাঘের হাত থেকে মানুষ বাঁচাতে বনরক্ষীরা বোটে পাহারা দেবেন। তবে বাঘ দেখলে রাইফেলের গুলি চালিয়ে মারা যাবে না, ট্রাঙ্কুলাইজার দিয়ে ঘুমপাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ধনকড়ের দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি সাহায্য, চুঁচুড়ার অসুস্থ শিশুর পাশে দাঁড়ালেন মমতা]

তবে রাতের অন্ধকারে যদি নিঃশব্দে বাঘ ঢুকে পড়ে গহীন জঙ্গলে তার হদিশ পাওয়া খুবই কঠিন। বাঘনা বিটে ডিউটিতে থাকা বনরক্ষীদের আধিকারিক এদিন জানান, “রাতে খাড়িপথে যদি আচমকা বাঘ বোটে ঝাঁপিয়ে পড়ে তবে গুলি চালানোর সময়ও পাওয়া যাবে না।” মূলত বনরক্ষীরা চোরাশিকারী ও কাঠচোর বা মাছ ধরতে জঙ্গলের ‘কোর’ জোনে অনুপ্রবেশ রুখতে নজরদারি চালান। বিএসএফের সঙ্গে বাংলাদেশি জলদস্যুদের রুখতে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। খাড়ি দিয়ে চলার সময় জঙ্গলের নির্জন কোণে কোথাও হরিণ বা প্রাণীরা মরে পড়ে থাকলেও তার হদিশ নিয়ে আসেন এই রক্ষীরা। কিন্তু আপাতত এদের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লোকালয়ে বাঘের অনুপ্রবেশ আটকানোর জন্যে। বছর পাঁচেক আগে চোরাশিকারীরা তিনটি বাঘ-শিশুকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করে। কিন্তু বিষয়টি ধামাচাপা দিতে যে বনকর্মী দেহ উদ্ধার করে তাকে ওই বিট থেকে রাতারাতি বদলি করে দেওয়া হয় সেসময়ে। তাই এখন এমন বাঘের দেহ পেলেও নিঃশব্দে সরে আসেন। চাপা ক্ষোভ বনকর্মীদের মধ্যেও। 

[আরও পড়ুন: ত্রাণ দেবে প্রশাসন, দলের কারও মাতব্বরি চলবে না, নেতা-কর্মীদের সমঝে দিল তৃণমূল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ