ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দলগতভাবে কোনও ত্রাণ দেওয়া যাবে না। ত্রাণ দেবে প্রশাসন। সরকারি সেই কাজে মাতব্বরিও করা চলবে না। আরও একবার দলীয় নেতাদের স্পষ্ট এ কথা বুঝিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।মঙ্গলবার দলের জেলা সভাপতি, বিধায়ক-সহ একাধিক পদাধিকারীকে নিয়ে টানা সাড়ে তিন ঘণ্টার ভিডিও কনফারেন্স বৈঠক সারে শাসকদল। ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ফিরহাদ হাকিম, অরুপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো তিন মন্ত্রী। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই কখনও মহাসচিব, কখনও অভিষেক, আবার কখনও পুরমন্ত্রী বা খাদ্যমন্ত্রী পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ত্রাণ নিয়ে দলের কারও নাক গলানো মেনে নেওয়া হবে না। যা হবে সব সরকারি স্তরে। করোনা প্রকোপ শুরু হতেই দলের বিধায়ক বা কাউন্সিলররা অধিকাংশই ত্রাণ বিলি শুরু করেন। অভিযোগ আসতে থাকে ত্রাণের নামে রেশন থেকে শস্যলুঠ পর্যন্ত করেছেন কেউ কেউ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে সকলকে বুঝিয়ে দেন ত্রাণ নিয়ে মাতব্বরি করা যাবে না।
এরপর আসে আমফান ঝড়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নতুন করে ত্রাণ বিলি শুরু হয়। তা নিয়ে ফের রাজনীতির অভিযোগ ওঠে। বিরোধীরা বলতে থাকে, শাসক দলের নেতা কর্মীদেরই প্রশাসন ত্রান নিয়ে অকুস্থলে যেতে দিচ্ছে। বিরোধীদের নয়। দলগত কোন্দলের অভিযোগও সামনে আসে। জনপ্রতিনিধিরা নিজের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে ত্রান বিলিয়ে দিচ্ছেন, এই অভিযোগে একাধিক জায়গায় গোলমাল বাধে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তার প্রেক্ষিতেই এদিন নেতৃত্ব প্রত্যেককে আরও একবার সতর্ক করে দিয়েছেন বলে সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, অভিষেক বলেছেন, দলের কেউ ত্রাণ দিতে যাবেন না। সেটা সরকারের কাজ। সেই কাজেও কেউ নাক গলাবেন না। এমনকী, বিজেপি যদি কোথাও ত্রাণ দিতে গিয়ে বিধিভঙ্গ করে, সেক্ষেত্রেও দলের কেউ যেন সেই গোলমালে না জড়ায়, হুঁশিয়ারি খাদ্যমন্ত্রীর। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন দরকার মতো যা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশাসন নেবে।
[আরও পড়ুন: ‘করোনাকে পাশবালিশ করুন’, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বিজেপির]
এর মধ্যে বুধবার থেকেই করোনা, পরিযায়ী শ্রমিক, ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রভৃতি ইস্যুতে বিজেপির মোকাবিলা করতে পথে নামছে তৃণমূল। বুধবার থেকে টানা আটদিন রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করবে নেতৃত্ব। বিজেপির নানা অভিযোগের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি করোনা ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি সরকার যেভাবে মোকাবিলা করছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে ধরে দল প্রচারে নামবে। এই পর্বের পরই একদিকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে এই প্রচার করতে হবে। অর্থাৎ এক অর্থে, দলকে ফের মাঠে নামানোর কাজ শুরু হল। সূত্রের খবর, অভিষেক বলেছেন, করোনা এবং আমফান ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে রাজ্য সরকার। যার কোনও তুলনা হয় না। আর সেসবে বাধা দিতে বিভিন্ন চ্যানেলে গিয়ে বসছে। তারা মাঠে নেই। মাঠ ফাঁকা। সেই ফাঁকা ময়দানে নেমে পড়তে হবে।