পলাশ পাত্র, তেহট্ট : নদিয়া জেলায় দলের অন্যতম পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরই সংগঠনের কাজে মাঠে নেমে পড়লেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূম জেলায় দলের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে সামলানো অনুব্রতকে ক’দিন আগেই নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলকে যৌথ দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই দায়িত্ব পাওয়ার পরই নদিয়ায় স্বমহিমায় দেখা গেল দলের এই দাপুটে নেতাকে। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে ফের দিলেন তাঁর পরিচিত ‘পাঁচন’ দাওয়াই। বললেন, নদিয়া জেলায় যেখানে শক্ত জমি আছে, সেখানে পাঁচন দিয়ে জমি ঠিক করতে হবে।
সোমবার তেহট্ট মহকুমার অন্তর্গত তিন বিধানসভার বুথস্তরের নেতা, কর্মীদের নিয়ে বেতাই কলম বাগানে কর্মিসভা করেন অনুব্রত
মণ্ডল। সেখান থেকেই তাঁর বক্তব্য, ‘আমার কাছে খবর আছে, এখানে সিপিএম-বিজেপি জোট করে আমাদের কয়েকটা পঞ্চায়েতে হারিয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় সমস্যা আছে, এক মাসের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত ভোটে এখানে আমাদের ভুলের জন্য অনেক জায়গায় হার হয়েছে। দেখে নেবেন সামনের লোকসভা ভোটে প্রতিটি বিধানসভায় ৩০ হাজার করে লিড হবে। আর যেখানে পাঁচন দেওয়ার দরকার সেখানে পাঁচন দিতে হবে, পাচন না দিলে জমির মাটি উর্বর হবে না।’এদিনের সভায় হাজির ছিলেন তেহট্ট মহকুমার দু’হাজারেরও বেশি নেতা,কর্মী। সভা মঞ্চে বসেই প্রতিটা পঞ্চায়েতের বুথ স্তরের কর্মীদের জনে জনে প্রশ্ন করলেন সংগঠনের হাল-হকিকত সম্পর্কে।
প্রথমে করিমপুর, তারপর পলাশীপাড়া, সবশেষে তেহট্ট বিধানসভার নেতাকর্মীদের কাছে একে একে জয়-পরাজয়ের ব্যাখ্যা চান জেলায় দলের সহ পর্যবেক্ষক। কোন পঞ্চায়েতে কটা বুথ, ভোটের মার্জিন কত – সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। ওই এলাকায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত সম্পর্কে প্রত্যেকেই নিজেদের মত প্রকাশ করেছেন।
[জনসংযোগে জোর, আদিবাসী মেলায় নাচ সাংসদ-বিডিওর]
যে সব পঞ্চায়েতে এখনও বোর্ড গঠনে বিভিন্নভাবে সমস্যা হয়েছে, সেই পঞ্চায়েতের প্রধানদের কাছে কারণ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সূত্রের খবর, তাঁর সব প্রশ্নের উত্তরে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বেশ কয়েকজন প্রধান। তাতে কিছুটা ক্ষুণ্ণ হলেও, নদিয়ার সংগঠনকে চাঙ্গা করতে তৃণমূলের অন্যতম ভরসাযোগ্য নেতা সবরকম স্ট্র্যাটেজির প্রয়োগ করতে চান। বিজেপির বিরুদ্ধেও এদিন তোপ দেগেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাবাদী, কারণ তিনি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অথচ রাখতে পারেনি। তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, অসম থেকে বাঙালিদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা কখনোই বাংলায় বরদাস্ত করা হবে না। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, সমস্ত সম্প্রদায়ের লোক বাংলায় বসবাস করেন। এখানে সকলেই সুরক্ষিত।