নিজস্ব সংবাদদাতা, আসানসোল: ‘পুলিশ কাকু, আমার বিয়ের বয়স হয়নি। বাবা তাও জোর করে বিয়ে দিতে চাইছে। আমি বিয়ে না করে পড়তে চাই।’ গভীর রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে গিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে এই নালিশ জানাল রানিগঞ্জের জে কে নগরের এক নাবালিকা। ব্লক প্রশাসন থেকে সোমবারই নাবালিকার বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের সতর্ক করা হয়।
[নেশার অন্ধকার থেকে পথভোলা শিশুদের আলোয় ফেরাচ্ছেন বাঙালি যুবক]
রানিগঞ্জের জে কে নগর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী পুষ্পা কুমারী। বাড়িতে তার বিয়ের তোড়জোড় করা হচ্ছিল। বিয়ে না করতে বাড়িতে জেহাদ ঘোষণা করে নাবালিকা ছাত্রীটি। বাবাকে নাবালিকা জানায়, সে পড়তে চায়। বিয়ের নির্দিষ্ট বয়স না হলে কিছুতেই বিয়ে করবে না। কিন্তু মেয়ের বাবা নাছোড়বান্দা। মেয়েকে বিয়ে তিনি দেবেনই। তাই গভীর রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হয় দশম শ্রেণির ছাত্রী।
রানিগঞ্জের জেমেরি পঞ্চায়েতের চলবলপুর এলাকার বাঁধকুঠি গ্রামে ওই নাবালিকার বাড়ি। বাড়ি থেকে রানিগঞ্জ থানার জে কে নগর পুলিশ ফাঁড়ির দূরত্ব প্রায় চার কিলোমিটার। শনিবার বাড়িতে যখন সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখনই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বছর পনেরোর ওই কিশোরী। প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পৌঁছয় পুলিশ ফাঁড়িতে। হাঁপাতে হাঁপাতে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের নিজের সমস্যার কথা জানায়। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকরা রাতেই ওই কিশোরীর বাড়ি যান। খবর পেয়ে ব্লক প্রশাসন রবিবার যোগাযোগ করে নাবালিকার বাড়িতে। খবর যায় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতেও। সোমবার আসানসোল থেকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি সদস্য নরেন্দ্রচন্দ্র গড়াই কিশোরীর বাবার সঙ্গে কথা বলতে তাঁর বাড়িতে যান।
[ছন্দে ফেরা পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি কেকে, টয়ট্রেন-কন্যাশ্রী নিয়ে উৎসাহ]
রানিগঞ্জের বিডিও প্রশান্তকুমার মাহাতো বলেন, ‘ওই কিশোরীর বাবাকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, মেয়ের বিয়ের বয়স না হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না।’ যদিও ওই কিশোরীর বাবা, বলদেব স্বর্ণকার জানিয়েছেন, বিয়ের কোনও তোড়জোড় করা হয়নি। মেয়ে দুষ্টুমি করছিল। তাই মেয়েকে ভয় দেখানোর জন্যই তিনি বিয়ে দেবেন বলেছিলেন।
[অভিযুক্ত উধাও, বদলে বাবাকেই আটক করল পুলিশ!]