চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: দুই বাংলার আত্মার যোগাযোগকে উসকে দিয়ে রবীন্দ্র-নজরুল প্রসঙ্গ তুললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ বাংলা ভাগ হলেও রবীন্দ্র-নজরুল অবিভক্ত৷ এই সম্মান শুধু কোনও ব্যক্তির নয়, দুই বঙ্গের আপামর বাঙালির৷ কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার দুপুরে আসানসোলে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এভাবেই দুই বাঙালির আত্মিক যোগকে আরও দৃঢ় করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ৷
বললেন, “ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। একসঙ্গে খাবার ভাগ করে খেয়েছে। ১৯৭৫-এর যুদ্ধবিধ্বস্ত সময় ভারত আমাদের পাশে থেকেছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে ভারত। আমি আজ এই সম্মানে আপ্লুত৷ এই সম্মান বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের আপামর বাঙালির।”
ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন হাসিনা৷ তিনি বলেন, “১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম সম্মান নিতে আমি এখানে এসেছিলাম। সেবারই নজরুলের জন্মস্থান চুরুলিয়ায় আমি গিয়েছিলাম। তখন সত্যিই দুরাবস্থা ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ তিনি সেই অবস্থার পরিবর্তন করেছেন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এজন্য তাঁকে অভিনন্দন।” বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুলের আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রতিটি বাঙালি। সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শুধু ইসলামিক ধর্মকথাই নয়। শ্যামা সংগীত, কীর্তনের মতো হিন্দুধর্ম তত্ত্বও সহজ বাংলায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে ছিলেন নজরুল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নজরুলের লেখায় অনুপ্রেরণার ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের।”
এদিন বিকেলে কলকাতায় ফিরে আসার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দুই নেত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের যে মধুর সম্পর্ক তার টানেই এই বৈঠক। ব্যক্তিগতভাবে কলকাতা আসার আগে ঢাকা থেকে ফোন করে মমতার সঙ্গে কথা বলে এই আলোচনার সূচি চূড়ান্ত করেছেন হাসিনা। মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরে সেকথা উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন, “আমাদের দুজনের মধ্যে বহুদিনের সম্পর্ক। তার জেরেই ফের আমরা দেখা করব। কথা বলব।” এছাড়া এদিন নেতাজি ভবনেও যাবেন হাসিনা।
এদিন বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রীকে ডি-লিট সম্মান দেওয়া হয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই ছিল সাজসাজ রব। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা উপস্থিত ছিলেন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.