ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের অবস্থান বদল। পাহাড়ের আবহাওয়ার মতো পাল্টে গেল বিমল গুরুংয়ের স্বর। শনিবার বনধ ঘোষণার সময় পর্যটকদের যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল মোর্চা। রবিবার বিমল গুরুং জানিয়ে দিলেন সোমবার থেকে আন্দোলন শুরু হবে। অতএব পর্যটকরা নেমে গেলেই মঙ্গল। মোর্চা সুপ্রিমোর এই পরোক্ষ হুঁশিয়ারিতে পাহাড়ে নতুন করে অনিশ্চয়তার মেঘ।আশঙ্কায় পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন পর্যটকরা। গুরুংদের জবাব দিতে তৈরি তৃণমূলও। বনধে ছুটি নেওয়া যাবে না বলে প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করেছে। পাশাপাশি পাহাড় সচল রাখতে তৃণমূল নেতারাও সোমবার থেকে পথে নামছেন।
[বনধেই ফিরল মোর্চা, অনেক ক্ষেত্র ছাড় দিয়ে মুখরক্ষার ব্যবস্থা]
শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বনধ। মাঝখানে ২ দিনের বিরতি। ফের বনধের রাস্তায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বনধ ডেকেও ছাড় দেওয়া হয়েছিল পর্যটন, পরিবহণ ব্যবস্থার মতো একাধিক ক্ষেত্র।শনিবার মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের শেষে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছিলেন পর্যটকদের কোনও অসুবিধা হবে না। এটা যে স্রেফ কথার কথা, ২৪ ঘণ্টা পরই তা অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেল। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুং রবিবার ঘুরপথে পর্যটকদের পাহাড় ছাড়ার ফতোয়া দিয়েছেন। গুরুং জানিয়েছেন সোমবার থেকে পাহাড়ে আন্দোলন শুরু হবে। এই অবস্থায় পর্যটকদের নেমে যাওয়াই ভাল। গুরুংয়ের এই হুঁশিয়ারির পর পাহাড় ছাড়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকারের ভরসায় যারা শনিবার পাহাড়ে গিয়েছিলেন। তারাও এখন দ্বিধায়। ঘণ্টায় ঘণ্টায় এভাবে সিদ্ধান্ত বদলে ক্ষুব্ধ পর্যটকরা। বনধ ডাকা নিয়ে মোর্চার অন্দরে বেশ কিছু দিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল। একপক্ষ হিংসাশ্রয়ী আন্দোলনের পক্ষপাতী। অন্যপক্ষ কিছুটা নরমপন্থী। সূত্রের খবর, দলের চরমপন্থীদের চাপে এই অবস্থানে বাধ্য হলেন গুরুং। মোর্চার বৈঠকে ঠিক হয়েছে সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন সরকারি অফিসের সামনে হবে পিকেটিং। অফিসে সরকারি কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হবে।
[মৌচাকে ঢিল মারায় মোর্চার এত গোঁসা, গুরুংকে জবাব মমতার]
মোর্চার কৌশলের পাল্টা রণকৌশলও শাসক শিবির ভেবে ফেলেছে। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে এর মোকাবিলা করা হবে। মোর্চা শিবিরের ওপর চাপ বাড়াতে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে ধরপাকড়। বৃহস্পতিবার তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ মোর্চা সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাহাড় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিন্নি শর্মা জানিয়েছেন, ‘ সোমবার পাহাড়ের সমস্ত ব্লকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মিছিল হবে। তৃণমূলের কর্মীরা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সরকারি কর্মীদের সাহস জোগাবেন। মানুষ যাতে পরিষেবা পান তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এদিন সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে পাহাড়ে বনধের দিন ছুটি নেওয়া যাবে না। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে প্রতিটি অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.