ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মান-অভিমানের পালা শেষ। পাখির চোখ একুশের নির্বাচন। গেরুয়া শিবিরের হাত ছেড়ে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দল তৃণমূলে ফিরলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্র। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে বিপ্লব মিত্র এবং তাঁর ভাই প্রশান্ত মিত্রর হাতে দলীয় পতাকা তুলে তাঁদের সাদরে বরণ করে নেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের এই ‘ঘর ওয়াপসি’তে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, তৃণমূলের একেবারে প্রথম দিককার সঙ্গী দক্ষ সংগঠন বিপ্লব মিত্রের ভূমিকার কথা মাথায় রেখে ফেরানো হল তাঁকে। এর জেরে অবশ্য বড়সড় ধস নামল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপিতে।
তৃণমূলের প্রথম দিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গী পোড়খাওয়া রাজনীতিক বিপ্লব মিত্র। দীর্ঘদিন সামলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতির পদ। পরবর্তী সময়ে নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষে সেই জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পরই দ্বন্দ্বে শুরু। অর্পিতা ঘোষ-বিপ্লব মিত্রের অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা তৃণমূলের অন্দরে সুবিদিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও অর্পিতার উপর নির্ভর করে এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন একাধিকবার। কিন্তু শেষমেশ উভয়ের মতান্তর আর মেটেনি। উনিশের লোকসভায় জেলায় দলের খারাপ ফলাফলের পর অভিমান নিয়েই বিপ্লব মিত্র সদলবলে তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে যান, যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে।
[আরও পড়ুন: নিহত দলীয় কর্মীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে ‘বাধা’, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সায়ন্তন]
কিন্তু এমন দক্ষ সংগঠকের দলত্যাগ তৃণমূলের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছিল। নেত্রী নিজেও পরে তা বুঝতে পারেন। ফলে বারবারই তাঁর বার্তা ছিল, যে পুরনো কর্মীরা অভিমান করে দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের সব বুথে কমিটিই হয়নি, বাংলা দখল নিয়ে চিন্তায় বিজেপি]
সম্প্রতি একুশের নির্বাচনের (Assembly Election) দিকে তাকিয়ে তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের দলীয় সংগঠনে বদল এনেছেন। তার প্রথম ধাপ অর্পিতা ঘোষকে জেলা সভানেত্রী পদ থেকে সরিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া। নতুন জেলা সভাপতি গৌতম ঘোষ। আর তারপরপরই বিপ্লব মিত্র এবং তাঁর ভাইয়ের তৃণমূলে ফেরা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বিপ্লব মিত্রদের ফেরার পথ প্রশস্ত করতেই অর্পিতা ঘোষকে সরানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে যাই হোক, দীর্ঘদিন দলের দক্ষ সংগঠক ফিরে আসায় দক্ষিণ দিনাজপুরে শাসক নেতৃত্বে শক্তি ফিরল বলে মনে করা হচ্ছে। উলটোদিকে, গেরুয়া শিবির দুর্বল হয়ে পড়ল বেশ খানিকটা।