স্টাফ রিপোর্টার, সিউড়ি: স্বামী বললেন ‘তালাক, তালাক, তালাক’। কিন্তু তিন তালাকেও কোনও হেলদোল লক্ষ্য করা গেল না স্ত্রীর। বরং চোয়াল শক্ত করে তিনি বললেন, “তুমি বোধহয় জানো না, দেশে এখন তিল তালাক আইনত নিষিদ্ধ।” শুধু একথা বলাই নয়, সোজা থানায় গিয়ে স্বামীর নামে নালিশ ঠুকে দিলেন স্ত্রী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে।
২০১৫ সালে দুবরাজপুরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের মিলি বিবি আর শের খাঁ ভালবেসেই বিয়ে করেছিলেন। পেশায় বিড়ি শ্রমিক শের খাঁর পরিবারে স্থান অকুলান হওয়ায় বিয়ের ছ’মাস পরে স্বামীকে নিয়ে একই পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে ওঠেন মিলি বিবি। ভালবাসার বিয়ে হলেও পণ হিসাবে একটি সোনার কানের দুল ও কুড়ি হাজার টাকা দাবি করে শের খাঁর পরিবার। মিলির পরিবার তা দিয়েও দেয়। কিন্তু টানাটানির সংসারে সেই টাকা ও কানের দুলের দাবি জানান শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদ। পরিবারের দাবির সঙ্গে গলা মেলান শের খাঁও। কিন্তু বেঁকে বসেন মিলি বিবি। তাঁর দাবি, আমাদের একমাত্র মেয়ে অসুস্থ। বিপদের সময় এটাই আমার সম্বল। তাছাড়া দুল তাঁকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।
[মাকে বাঁশপেটা করে বাড়িছাড়া করল ‘গুণধর’ ছেলে]
রবিবার পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে মিলির কাছে উপস্থিত হন শের খাঁ। ফের কানের দুল ও টাকা চান শের খাঁ। যথারীতি তা দিতে অস্বীকার করেন মিলি বিবি। এর পরই তালাক। এবং মিলির থানায় যাওয়া। মিলি বলেন, “বর্তমানে তালাক নিষিদ্ধ। তা আমি জানি। তাই ভয় পাইনি। নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।” তাঁর আইনজীবী তপন সাহানা জানান, মিলির পরিবারকে জানিয়ে দিই, তালাক বর্তমান ভারতে অসাংবিধানিক। এরপরই তারা দুবরাজপুর থানায় যায়। মিলি বিবি তাঁর উপর অত্যাচারের জন্য স্বামীর পাশাপাশি শ্বশুর-শাশুড়ি-ননদের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও পুলিশ এখনও এ বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
তালাকে যে কোনও কাজ হয়নি, তা বুঝতে পেরেই মিটমাটের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে ছুটে যান শের খাঁ। এ প্রসঙ্গে সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন বলেন, “শের খাঁ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন। ও সসম্মানে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আমি দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে দেব।”
[রক্ষকই ভক্ষক, চলন্ত ট্রেনে তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ জওয়ানের বিরুদ্ধে]