ফাইল ছবি।
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ৯ বছর পর আলিপুরদুয়ার সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পালটা পাকিস্তানকে সবক শেখাতে মোদি সরকারের অপারেশন সিঁদুরে কোমর ভেঙে গিয়েছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে গিয়েছে ভারতীয় সেনার আক্রমণে। সেই অপারেশনের সাফল্য প্রচারেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২৯ মে, বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ডে তাঁর জনসভা। তবে শুধু জনসভাই নয়, ওইদিন মোদি প্রশাসনিক সভাও করবেন। তার জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা মঞ্চ। মোদির সফরের এক সপ্তাহ আগে এলাকা পরিদর্শন করে এই নতুন খবর শোনালেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা।
শেষবার প্রধানমন্ত্রী মোদি আলিপুরদুয়ার এসেছিলেন সেই ২০১৬ সালে, বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার। তারপর ২০১৯, ২০২১, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে কখনও সীমান্তের এই জেলায় যাননি প্রধানমন্ত্রী। এবার ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের আলিপুরদুয়ারে আসছেন তিনি। নানা দিক থেকে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ২৯ তারিখ প্যারেড গ্রাউন্ডে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য বর্ণনা করে জনসভা করবেন মোদি। শুধু তাইই নয়, একইদিনে সেখানে প্রশাসনিক সভাও করবেন। আজ, এলাকা পরিদর্শন করে এমনই জানালেন বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা।
আলিপুরদুয়ারের সাংসদ এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন, ”প্রধানমন্ত্রীর আলাদা দুই কর্মসূচির জন্য দুটি আলাদা মঞ্চ তৈরি হবে। কর্মসূচির জন্য প্যারেড গ্রাউন্ডে তিন থেকে চারটি হেলিপ্যাড তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী সিকিম থেকে আলিপুরদুয়ারে আসবেন চপারে। নামবেন আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে।” এদিন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর অর্থাৎ দিল্লি থেকে আধিকারিকদের একটি দল আলিপুরদুয়ারে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁদের সঙ্গে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা ও জেলা বিজেপির সভাপতি মিঠু দাসও ছিলেন। গোটা মাঠ ঘুরে দেখেন তারা। সম্প্রতি বৃষ্টিতে মাঠজুড়ে জল-কাদা। আর তা দেখে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে মনোজ টিগ্গা আশ্বস্ত করে বলেন, ”২০১৬ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী বীরপাড়ায় এসেছিলেন, তার আগেরদিন প্রচণ্ড ঝড়জল হয়েছিল। কিন্তু পরদিন ঠিক সেখানেই সভা হয়েছে। কোনও অসুবিধা হয়নি। এবারও এনিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এই প্যারেড গ্রাউন্ডেই হবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা আর প্রশাসনিক বৈঠক।”
আসলে প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরে আলিপুরদুয়ারকে বেছে নেওয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, সাম্প্রতিক অশান্ত পরিস্থিতিতে সীমান্ত লাগোয়া এই জেলার গুরুত্ব বেশি। এখানে রয়েছে উত্তরের সবচেয়ে বড় বায়ুসেনা ঘাঁটি হাসিমারা। যেখানে রয়েছে দুটি রাফালে বিমান। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তা উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পাঞ্জাবের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। শত্রুপক্ষকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ওই দুটি যুদ্ধবিমানকে। এছাড়া রাজনৈতিক দিক থেকে দেখলেও, সদ্যই এখানকার চা বলয়ের জনপ্রিয় নেতা তথা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী জন বার্লা দলবদল করে শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছেন। সেই প্রভাবে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি যাতে টলমল না হয়, সেদিকেও বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরে। এই পরিস্থিতিতে মোদির আগমন এবং বার্তা আরও খানিকটা শক্তি জোগাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.