শুভময় মণ্ডল: লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় একটি কথা বারবার শোনা গিয়েছিল। বাংলায় বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ। অর্থাৎ নির্বাচনে ৪২টি আসনই পাবে তৃণমূল। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই হল না। গেরুয়া ঝড়ের তাণ্ডবের সামনে কোনওক্রমে মান বাঁচিয়ে গড় রক্ষা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় অভূতপূর্ব ফল করে বিজেপি। ভোটগণনা শেষে দেখা যায় তৃণমূল পেয়েছে ২২টি আসন। সেখানে বিজেপির দখলে ১৮টি আসন। আর কংগ্রেস পায় দুটি। নির্বাচন কমিশনের আরও একটি তথ্য বিজেপি সমর্থকদের মুখে নিঃসন্দেহে হাসি ফোটাবে। কারণ পোস্টাল ব্যালট গণনার পর এ রাজ্যে অনেকখানি এগিয়ে ছিল বিজেপিই।
[আরও পড়ুন: ‘এবার সুচিত্রা সেনের আত্মার কী হবে?’ মুনমুনের হারের পরই নেটদুনিয়ায় হাসির রোল]
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, পোস্টাল ব্যালট গণনার পর দেখা যায় বিজেপির দখলে ৩৯টি আসন। তৃণমূল একটি এবং সিপিএমর দখলে যায় একটি আসন। বাদ ছিল ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র। সেখানে কোনও পোস্টাল ব্যালট নেই। পোস্টাল ব্যালট গণনা শেষে বিজেপির দখলে গিয়েছিল, আসানসোল, আরামবাগ, বিষ্ণুপুর, দমদম, ঘাটাল, হুগলি, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, উলুবেড়িয়া, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বর্ধমান পূর্ব, শ্রীরামপুর, তমলুক, বালুরঘাট, বাঁকুড়া, বারাসত, বারাকপুর, ঝাড়গ্রাম, জয়নগর, কাঁথি, মথুরাপুর, রানাঘাট-সহ মোট ৩৯ আসন। তৃণমূলের দখলে যায় কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্র। যাদবপুরে থাবা বসায় বাম। তবে দিন যত গড়ায় বদলায় ট্রেন্ড। তৃণমূলের মাটি শক্ত হতে শুরু করে। তবে পোস্টাল ব্যালটে বিজেপির এগিয়ে থাকা কিন্তু সরকারি কর্মীদের শাসকদলের বিরুদ্ধে অসন্তোষেরই ইঙ্গিত দিয়েছে।
সরকারি কর্মীদের অসন্তোষের মূলত দুটি কারণ। প্রথমত, রাজ্যে নতুন বেতন কমিশন চালু না করা এবং দ্বিতীয়ত ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের গরিমসী। যার প্রতিফলনই ঘটেছে পোস্টাল ব্যালটে বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। শাসকদলকে নিশানা করে বাংলায় বদল আনার আহ্বান জানিয়েছিল বিজেপি। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মী ও ভোটকর্মীদের পোস্টাল ব্যালটে বিজেপির এগিয়ে যাওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।