Advertisement
Advertisement
বিবাহবার্ষিকী

দাম্পত্যের সুবর্ণ জয়ন্তীতে মহৎ আয়োজন, সংকট মেটাতে রক্তদান শিবির দম্পতির

বছর খানেক আগে স্ত্রীকে বাঁচাতে রক্তের জন্য ছুটোছুটি করতে হয়েছিল৷

Blood donation camp on the 50th Marriage Anniversary at Tehatta
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 2, 2019 5:18 pm
  • Updated:August 31, 2022 3:16 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: স্ত্রী দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন৷ আর O নেগেটিভ রক্তের খোঁজে হয়রান হয়ে যাচ্ছিলেন স্বামী৷ তখনই ঠিক করে রেখেছিলেন, রক্তদানকে মহৎ কর্তব্য বলে প্রতিষ্ঠা করতে শিবিরের আয়োজন করবেন৷ নিজেদের ৫০তম বিবাহবার্ষিকীতে সেটাই করলেন সুমন্ত রায়৷

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ লক্ষ ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা পোস্ট কার্ড পাঠানোর হুঁশিয়ারি অর্জুনের]

বিখ্যাত সাহিত্যিক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর সম্পর্কিত নাতির সঙ্গে বিয়ে বলে কথা। উদ্বেগ, বুক ঢিপঢিপানি ছিলই। তার সঙ্গে ছিল উত্তেজনাও। মাত্র বাইশ বছর বয়সে এক মেয়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া। বন্ধুদের সঙ্গে হইহই করতে করতে যাওয়ার মাঝেও এসব উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল সেদিন। বাহাত্তর বছরের সুমন্ত রায়ের স্মৃতিতে আজও এসব উজ্জ্বল। সমস্ত কিছু পেরিয়ে স্ত্রী শকুন্তলার সঙ্গে এক ছাদের তলায় কেটে গিয়েছে পঞ্চাশ বছর।

Advertisement

বছর খানেক আগে প্রিয়তমা শকুন্তলাদেবী পথদুর্ঘটনার মুখে পড়ে ভরতি হন কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে৷ শকুন্তলা দেবীর O নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন হয়৷ খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে যান সুমন্তবাবু। মনে মনে তখন থেকেই ঠিক করেছিলেন, কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরে একটা রক্তদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন। সেইমতো এক বছর আগের ঘটনার স্মরণে বাবা,মায়ের বিয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে তেহট্টর একটি লজে রক্তদান শিবির করেন ছেলে দীপংকর রায়। রবিবার দুপুরে রক্তদান ছাড়াও দুঃস্থদের পুস্তক বিতরণ করা হয়। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার শহিদ সুদীপ বিশ্বাসের মাধ্যমিক পাশ করা মেধাবী ভাইঝি মৌমিতাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা হয়। সঙ্গে ছিলেন শহিদেরর মা মমতা ও বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম’ বলে হামলা, তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে]

ষাট পেরিয়ে যাওয়া শকুন্তলা দেবী ছেলে, পুত্রবধূ, নাতিদের নিয়ে এই দিনটা কাটালেন আনন্দে৷ ৫০ বছর আগে মুর্শিদাবাদের কান্দির বাড়ি থেকে বিয়ের পর  তেহট্টে আসার পর্ব নিয়ে জিজ্ঞেস করতে এখনও লজ্জা পান। তবু স্মৃতি হাতড়ে বললেন অনেক কিছু৷ বাড়িতে বরাবর শিক্ষা, রাজনৈতিক সচেতন পরিবেশ ছিল। বাপের বাড়ির সম্পর্কে দাদু ছিলেন বিখ্যাত লেখক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী। বাবা ও পরিবারের সদস্য মিলিয়ে সেই আমলে দু’জন বিধায়ক ত্রিবেদী বাড়িতে ছিলেন। তাই সচেতনতা ছিলই। এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে  তাঁর বক্তব্য, ‘গ্রীষ্মকালে রক্তের সমস্যা থাকে। তাই ছেলে যখন রক্তদানের কথা  বলে, কোনও আপত্তি করিনি। বরং উৎসাহ দিয়েছি।’ সুমন্তবাবু বলেন, ‘আমি রক্তদান শিবির করার কথা বলেছিলাম। কিন্ত ছেলে বলল, আমাদের বিবাহ বার্ষিকীর পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে করবে।  দেখতে দেখতে কীভাবে যে পঞ্চাশটা বছর কেটে গেল, ভাবতেই পারি না৷ সকলে ভাল থাকুক, এটাই কামনা করি।’

এদিন পলাশিপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা এই অনুষ্ঠানে প্রথম রক্তদাতা মধুছন্দা রায়ের হাতে একটি গাছের চারা তুলে দেন। তাপসবাবুর কথায়, ‘এটা দারুণ ব্যাপার। এই দিনে রক্তদানের অনুষ্ঠান বিষয়টি সত্যিই অভিনব, অনুপ্রেরণারও৷’ এদিন রক্তদান অনুষ্ঠানে সাহায্য করেছে তেহট্ট রেডক্রস সোসাইটি৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ