বাবুল হক, মালদহ: ভাঙন রোধের কাজ দেখতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমায় গুরুতর জখম মালদহের সেচ দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার-সহ তিনজন। অভিযোগ, সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা ওই অফিসারদের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। আধিকারিকদের বাঁচাতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ছুটে আসলে দুষ্কৃতীরা মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ফাটিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় বলেও অভিযোগ। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ভূতনি থানার হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশবপুর কলোনি এলাকায়। আহতদের উদ্ধার করার পর প্রথমে মাণিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর প্রত্যেককেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷
[ আরও পড়ুন: তৃণমূল কর্মীর খামার বাড়িতে বিস্ফোরণ, চাঞ্চল্য কাঁকড়তলায়]
শনিবার দুপুর একটা নাগাদ নদী ভাঙনের কাজ তদারকি করে ফিরছিলেন সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা৷ কেশবপুর এলাকার নির্জন রাস্তায় একদল দুষ্কৃতী আধিকারিকদের গাড়ি আটকায়। গাড়ির সামনের কাচে অতর্কিতে বোমা ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা ফাটিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় তারা। আহতদের মধ্যে রয়েছেন সেচ দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ মিশ্র, আলম শেখ এবং গাড়ির চালক বিট্টু ঘোষ। তিনজনকেই মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ভূতনি এলাকার গঙ্গার ভাঙন রোধের কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার নীরেন ঘোষ বলেন, ‘‘সেচ দপ্তরের আধিকারিকেরা কাজ তদারকিতে এসেছিলেন। হঠাৎ করে তাঁদের উপর কেন এভাবে বোমাবাজি করা হল কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ মালদহের সেচ দপ্তরের আধিকারিক প্রণব কুমার সামন্ত জানিয়েছেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা কেন বোমাবাজি করল কিছুই বুঝতে পারছি না। তবে ওই এলাকায় এর আগেও একটা সমস্যা হয়েছিল। বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
[ আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতাদের লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি, ধুন্ধুমার কাঁচরাপাড়ায়]
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজে তোলা আদায়কে কেন্দ্র করে গন্ডগোল চলছিল৷ তার জেরেই দুষ্কৃতীরা আধিকারিকের গাড়িতে বোমাবাজি করেছে৷ মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি শোনার পরই সেখানে আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে জড়িত দুষ্কৃতীদের কোনওভাবেই ছাড়া হবে না। দুষ্কৃতীদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।’’ জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‘কেশবপুর এলাকায় এর আগেও ভাঙন প্রতিরোধের কাজের একটা সমস্যা হয়েছিল। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সমস্যা মিটে গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে এই হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দনীয়। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’