Advertisement
Advertisement

Breaking News

জঙ্গিদের হাত থেকে বাবাকে বাঁচাতে হবে, নিরুদ্দেশ যাত্রা সিআরপিএফ জওয়ানের ছেলের

ছেলের হঠকারিতায় স্তম্ভিত খোদ বাবা।

Boy goes missing in Siliguri
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:February 20, 2019 7:48 pm
  • Updated:February 20, 2019 7:48 pm

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: বাবা সিআরপিএফ জওয়ান অমল বর্মনকে বাঁচাতে কাশ্মীর রওনা দিল শিলিগুড়ির কিশোর। সঙ্গে সমবয়সী সহপাঠী। কোথায় কাশ্মীর জানা নেই, বাবা আদৌ কাশ্মীরে পোস্টেড কিনা তাও ঠিকমতো জানে না সে। তবে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা সবাই সিআরপিএফ জওয়ান সেটা বুঝতে পেরেছে ১৪ বছরের ছোট্ট তোতন। তাই গত কয়েকদিনের আলোচনায় মুষড়ে পড়েছিল সে। বাবার বিপদে পাশে দাঁড়াতে হবে, এ’কথাও একাধিক জায়গায় আলোচনা করেছে। সোমবার স্কুল থেকে ফিরে সন্ধ্যা নাগাদ সহপাঠী গুঞ্জন রায়ের বাড়ি যায়। তারপর তারা দু’জনে বের হয়। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তাদের। রাতে বাগডোগরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিখোঁজ ছাত্রের মা পূর্ণিমাদেবী। পুলিশ সম্ভাব্য সমস্ত রকম জায়গায় এবং জিআরপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে খোঁজখবর শুরু করেছে। বাগডোগরা থানার ওসি দীপঙ্কর গোস্বামী জানান, খোঁজ চলছে। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’জনের কারও কোনও খোঁজ মেলেনি।

বাবা সিআরপিএফ-এ চাকরি করে। তবে পোস্টিং বর্তমানে জামশেদপুরে। কিন্তু পুলওয়ামার জঙ্গি আক্রমণের ঘটনায় ৪৯ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হওয়ার পর থেকেই বাড়িতে একটা চাপা আতঙ্কের আবহ দেখতে পেয়েছিল ১৪ বছরের তোতন বর্মন। ছোট্ট মনে তা গভীর প্রভাব ফেলে। তার ধারণা হয়েছে, বাবা বোধহয় কাশ্মীরেই রয়েছে। তাই এই মূহূর্তে বাবার বিপদ। বাবার কাছে যাওয়া দরকার। শুধু ভাবনাই নয়, বাড়িতে মাকে ও স্কুলে বন্ধুদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা করেছে সে। উদ্বেগও প্রকাশ করেছে অষ্টম শ্রেণির তোতন। কেউ কেউ আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে তেমন কোনও আশ্বাসবাণী পায়নি। ফলে কি করা উচিত বুঝতে না পেরে এক বন্ধুকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছে নিরুদ্দেশ যাত্রায়।

Advertisement

[পুলওয়ামার বদলা! জয়পুরের জেলে পিটিয়ে মারা হল পাকিস্তানি বন্দিকে]

Advertisement

তোতনের বাড়ি বাগডোগরায় হলেও সে রাঙাপানির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে। ঘটনার পর থেকে ভেঙে পড়েছেন দুই পরিবারেরই সদস্যরা। তোতনের মা বলেন, “ক’দিন ধরেই বাড়িতে বলছিল, কাশ্মীরে চলে যাবে বাবার কাছে। নতুন বন্দুক তৈরি করে জঙ্গিদের হত্যা করবে। আমরা ছেলেমানুষি মনে করে গুরুত্ব দিইনি। তবে মনমরা হয়েছিল ক’দিন থেকেই। একবারও বুঝতে পারিনি, এভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে। গুঞ্জনের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যেতে তোতন তাদের বাড়ি আসে। বেশ কিছুক্ষণ ঘরে গল্পগুজব করে। তারপর দু’জনই বেরিয়ে যায়। এরপর দীর্ঘক্ষণ ফিরছে না দেখে খোঁজখবর করেও হদিশ মেলেনি। তোতনের মাকে ফোন করে জানতে পারেন, তারা ওদের বাড়ি যায়নি। এরপর দুই পরিবার বহু খুঁজেও কোনও লাভ হয়নি। এদিন ছেলে নিখোঁজের খবর পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন অমলবাবু। তিনি জানান, “স্কুলের এক বন্ধুর কাছ থেকে পাঁচশো টাকা নিয়েছে বলে শুনেছি। সঙ্গে বইয়ের ব্যাগ ছাড়া আর কিছু নেই। কিছুই বুঝতে পারছি না।” সন্ধ্যার পর তাদের এনজেপি স্টেশনের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে বলে এক গাড়িচালক পুলিশকে জানিয়েছে। তার ভিত্তিতে এনজেপি স্টেশনের সিসিটিভিগুলি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ