সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার (South 24 Parganas) বজবজ জুটমিলে ‘সাময়িক কর্মবিরতির’ নোটিস ঝুলিয়ে দিল কর্তৃপক্ষ। আচমকাই এই কর্মবিরতি ঘোষণা হওয়ায় উদ্বিগ্ন ওই মিলের কয়েক হাজার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার।
জানা গিয়েছে, বজবজ জুটমিলের শ্রমিকরা শনিবার সকালে কাজে এসে দেখেন মিলের গেট বন্ধ। বন্ধ গেটে ঝুলছে কর্মবিরতির নোটিশ। হতভম্ব হয়ে যান শ্রমিকরা। ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভও দেখান। নোটিশে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাঁচা পাটের অপ্রতুলতা ও প্রতিদিন উৎপাদন কমার কারণে কর্তৃপক্ষকে প্রচুর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই ‘সাময়িক কর্মবিরতি’ ঘোষণা করতে হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি মানতে রাজি নয় শ্রমিকপক্ষ। শ্রমিকদের কথায়, উৎপাদন কমার জন্য দায়ী কারখানা কর্তৃপক্ষই, শ্রমিকরা নয়।
বেঙ্গল চটকল মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সিটু নেতা ইব্রাহিম মল্লিক জানান, এ ব্যাপারে তাঁরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসবেন। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান তিনি। ওই জুটমিলের আইএনটিটিইউসির সম্পাদক প্রসেনজিৎ মিত্র জানিয়েছেন, বুধবার পর্যন্ত তাঁরা মিলে কাজ করেছেন। কাঁচামালের অভাব রয়েছে। কিন্তু এই কর্মবিরতির কথা আগে থেকে কিছুই শ্রমিকদের জানানো হয়নি। হঠাৎই শ্রমিকরা শনিবার সকালে কাজে এসে কর্মবিরতির নোটিস দেখে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকেই তাঁদের ক্ষোভও ব্যক্ত করেছেন। দ্রুত কারখানা খোলার দাবিতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন তাঁরা।
বজবজ জুটমিলে পাঁচহাজার শ্রমিক কাজ করেন। লকডাউনে দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের। এবার আচমকা কর্তৃপক্ষ কর্মবিরতি ঘোষণা করায় সাংসারিক জীবনে ফের তাঁদের ঘোরতর সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হবে বলে আশঙ্কা। কারণ নোটিসে পরিষ্কার বলা রয়েছে, এই সাময়িক কর্মবিরতি ‘কাজ নেই, মজুরী নেই’ হিসেবেই গণ্য হবে। কেবলমাত্র অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিভাগের শ্রমিকরাই প্রয়োজন অনুসারে কাজ পাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.