Advertisement
Advertisement

আমি পড়তে চাই কাকু! পুলিশ হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ বর্ধমান স্টেশনের ‘স্লামডগ’

ডেনড্রাইটের নেশা থেকে অনেক দূরে এখন দিওয়ানা।

Burdwan ‘slumdog’ fights poverty, wants to be a cop
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 28, 2018 2:38 pm
  • Updated:April 28, 2018 2:38 pm

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: নাম তার দিওয়ানা৷ আশিক-মজনুদের সঙ্গে ওঠাবসা৷ রাত্রিবাসও তাদের সঙ্গে৷ কখনও শেডের নিচে, কখনও খোলা আকাশের নিচে৷ দিওয়ানা-আশিক-মজনুরা সকলেই অভিভাবকহীন৷ এদের সকলেরই ঠিকানা প্ল্যাটফর্ম৷

আশিক-মজনুরা ডেনড্রাইটের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে৷ দিওয়ানাকেও বার কয়েক নেশা ধরানোর চেষ্টা হয়েছিল৷ কিন্তু, সতর্ক দিওয়ানা তা এড়িয়ে গিয়েছে বারংবার৷ স্টেশন চত্বরের পথ-শিশুদের অনেকের থেকেই একটু ব্যতিক্রম যেন দিওয়ানা।

Advertisement

ব্যতিক্রমী এই নাবালক পড়তে চায়। অনেক অনেক পড়াশোনা করে পুলিশ হতে চায়৷ আর সেই লক্ষ্যেই এবার দিওয়ানাদের জন্য জেলা প্রশাসনরে উদ্যোগে বর্ধমান স্টেশনে প্ল্যাটফর্মে চালু হয়েছে বিশেষ পাঠশালা। যেখানে বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা পথ-শিশুদের পাঠ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন।

Advertisement

বছর আটের ওই নাবালকের পুরো নাম দিওয়ানা রায়। থাকে বর্ধমান স্টেশন চত্বরে। বাবা-মায়ের কথা তার ঠিক মনে নেই। তবে দাদু মোহন রায় ও ঠাকুমা ভাকুরি রায়কে চেনে। মাঝে মাঝে তাদের সঙ্গেও থাকে। বাবা-মা কোথায় থাকে তা-ও সঠিকভাবে বলতে পারছে না ওই ছেলে। সম্ভবত পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার কোথাও তারা আগে থাকত। আসল বাড়ি সম্ভবত মুর্শিদাবাদের দিকে। প্রতিদিন খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো জোটে না। সহৃদয় কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে কোনও কোনও দিন হয়তো পেটপুরে খেতে পারে। বছরে কখনও-সখনও নতুন জামা গায়ে ওঠে। না হলে শতচ্ছিন্ন ময়লা জামা-প্যান্ট পরেই কাটিয়ে দেয় বছরভর৷

শুক্রবার সে জানায়, স্টেশন চত্বরে থাকতে তার ভাল লাগে না। কেন? তার কথায়, “ওরা সবাই কী সব নেশা করে। আমার একদম ভাল লাগে না। আমাকে জোর করে খাওয়াতে চায়। আমি খাই না। তাই দিনের বেলা তাই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াই।” খেলাধুলার বয়স এটা। তাই খেলার সামগ্রীও জুটিয়ে নিয়েছে একটা। লাগেজ ট্রলির একাংশ কোথাও কুড়িয়ে পেয়েছে। ট্রলির চাকা লাগানো অংশর কাঠামোটা দিয়ে বানিয়ে নিয়েছে তার খেলনা গাড়ি। তাতেই দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে কোনও ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনা পছন্দের টুকিটাকি জিনিস। দিনভর ওই খেলনা গাড়িই তার সঙ্গী।

সম্প্রতি সে জেলা প্রশাসনের প্ল্যাটফর্মের পাঠশালায় যাওয়া শুরু করেছে। নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার খুবই ইচ্ছা তার। বলে, “স্কুলে পড়ব। বড় হয়ে আমি পুলিশ হব৷ যারা ওইসব খাবে তাদের ধরব৷’’ স্ল্যামডগ মিলিওনেয়ার হয়েছিল হলিউডের পর্দায়। বর্ধমানের স্ল্যামডগ পুলিশ হতে চায়। দিওয়ানা কী হবে ভবিষ্যৎই বলবে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ