Advertisement
Advertisement

Breaking News

kidney damage

কিডনি বিকলের খবরে ঘর ছেড়েছে স্ত্রী, মরণাপন্ন যুবকের পাশে গ্রামের বন্ধুরা

ছেলেকে কিডনি দিতে তৈরি মা।

Wife left her severely ill husband; local youths are taking care of him
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 20, 2018 6:26 pm
  • Updated:May 9, 2019 2:15 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: কিডনি বিকলের খবর চাউর হতেই ছেড়ে গিয়েছে স্ত্রী। শেষপর্যন্ত ছেলেকে সুস্থ করতে নিজের কিডনি দিতে তৈরি মা। তবুও টাকার টান। কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচা বাবদ প্রায় লাখ পাঁচেক টাকা দরকার। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন মরণাপন্ন যুবকের বন্ধুরাই। এলাকার দোকান থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুরু হয়েছে চাঁদা সংগ্রহের কাজ। একটাই লক্ষ্য অরিজিতকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা। এককথায় জীবন পণ করেছেন বন্ধুরা। ছেলের বন্ধুদের এই উদ্যোগে খুশি মা কল্পনা ভক্ত। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দাঁইহাট। এই দাঁইহাটেরই বাসিন্দা অরিজিৎ ভক্ত (২৬)। জামশেদপুরের একটি গেস্ট হাউসে রান্নার কাজ করতেন। কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বাড়িতে এসে চিকিৎসা শুরু হতেই কিছু শারীরিক গোলমাল ধরা পড়ে। অরিজিতের দাদা ও ভাই রয়েছেন। ভাই মিঠুন ভিনরাজ্যের একটি হোটেলে কর্মরত। দাদা শুকচাঁদ স্থানীয় দোকানে কাজ করেন। মেজদার শরীর খারাপ দেখে বাইকটি বিক্রি করে দেন মিঠুন। সেই টাকায় দাদাকে নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে যান। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই জানা যায়, অরিজিৎবাবুর দু’টো কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছে। ততদিনে সমস্ত টাকাপয়সা খরচ হয়ে গিয়েছে। তাই পরিচিত একজনের কাছ থেকে টাকা ধার করেই দাদাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন মিঠুন।

[নিখরচায় পড়াশোনার লোভ দেখিয়ে নাবালককে পাচারের অভিযোগ মন্তেশ্বরে]

এদিকে মিঠুনের কাছ থেকে স্বামীর শারীরিক পরিস্থিতির খবর পেয়েই বাপের বাড়ি কেতুগ্রামে ফিরে যান অরিজিৎবাবুর স্ত্রী পূজা ভক্ত। বছর দু’য়েক আগে বিয়ে হয়েছে অরিজিতের। তাঁদের মাস ছ’য়েকের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। তবে বাপের বাড়িতে যাওয়ার পর একবারের জন্যেও স্বামীর খোঁজখবর করেননি পূজাদেবী। এদিকে ছেলের পরিস্থিতি দেখে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন কল্পনাদেবী। পরীক্ষা করে জানা যায়, তিনি ছেলেকে কিডনি দিতে পারবেন। এরপরই একটি কিডনি ছেলেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বাবা সুবল ভক্ত ভ্যানরিকশ চালক। তাঁর পক্ষে ছেলের চিকিৎসার খরচ চালানো সম্ভব নয়। তাই কল্পনাদেবী বলেন, ডাক্তার বলেছেন কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারলেই সুস্থ হয়ে যাবে ছেলে। তাই ছেলেকে কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে তাতেও কয়েক লক্ষ টাকার ধাক্কা। অভাবের সংসার টাকা কোথায় পাব ? এখনই সপ্তাহে দু’বার ডায়ালিসিস চলে। তাই পাড়ার ছেলেরাই চাঁদা তুলে চিকিৎসার ব্যবস্থার চেষ্টা করছে।

Advertisement

[কলেজে বৈঠক চলাকালীন লাইব্রেরিয়ানকে মেঝেতে ফেলে মার অধ্যাপিকার]

এদিকে ভক্ত পরিবারের এই অবস্থা দেখে অরিজিতের গ্রামের বন্ধুরাই পাশে দাঁড়িয়েছেন। কয়েকজন মিলে শনিবার থেকে কাটোয়া ও দাঁইহাট এলাকায় দোকানে দোকানে চাঁদা তুলতে শুরু করেছেন। স্থানীয় যুবক রতন সাহা, পুলক বিশ্বাস, বাসুদেব সাহারা বলেন, ‘প্রাণপণে চেষ্টা করছি যাতে তাড়াতাড়ি কিছু টাকা জোগাড় করতে পারি। স্থানীয়রা আবেদনে সাড়াও দিচ্ছেন। এক অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারলে নিজেদের জীবন সার্থক মনে করব।’

Advertisement

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ