ফাইল ছবি
অর্ণব আইচ: দক্ষিণ ২৪ পরগনার চার নিখোঁজের সন্ধান মেলেনি সিবিআইয়ের তদন্তে। তাই এবার সিবিআইয়ের ভরসা ‘জনগণ’ই। এই নিখোঁজদের সন্ধান পেতে এবার জেলার বিভিন্ন স্টেশন আর বাজারে পোস্টার সাঁটল সিবিআই। আর তাতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও এই চারজন একসঙ্গে নিখোঁজ হননি। তিনটি বিভিন্ন ঘটনায় নিখোঁজ হন চারজন। নিখোঁজ এক যুবক, এক গৃহবধূ ও দুই নাবালিকা প্রত্যেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার বাসিন্দা। আলাদা আলাদা সময়ে তাঁরা নিখোঁজ হন। অনেক ক্ষেত্রেই অপহরণের অভিযোগ ওঠে। তারই ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টের নির্দেশে এই তদন্তভার হাতে পায় সিবিআই।
গত মে মাসে এই ব্যাপারে তিনটি আলাদা মামলাও শুরু হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দপ্তরে। সিবিআই সূত্রের খবর, আধিকারিকরা অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদেরও আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যদিও নিখোঁজদের কোনও সন্ধান মেলেনি। তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন, বা তাঁরা কোথায় রয়েছেন, তাও ধোঁয়াশা সিবিআইয়ের সামনে। তাই শেষ পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধান পেতে এলাকার বাসিন্দাদেরই তথ্য ‘ভরসা’ সিবিআইয়ের।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে গোসাবা থানায় শ্যামল নস্কর নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন। গোসাবার শম্ভুনগরের মিত্রপুরের ওই বাসিন্দার অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না নস্কর সাড়ে চার বছরের মেয়েকে নিয়ে আত্মীয়র বাড়ি যাবেন বলে বের হন। কিন্তু ক্যানিংয়ের আমতলায় আত্মীয়র বাড়ি তিনি যাননি। এর পর থেকেই ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও মেয়ে নিখোঁজ। অন্য অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তারও আগে, ২০১৪ সালে। সন্ধ্যা সাহা নামে এক মহিলা জীবনতলা থানায় অভিযোগ জানিয়ে বলেছিলেন যে, তাঁর সাত বছরের ভাইঝি ২০১৪ সালের ২ আগস্ট থেকে নিখোঁজ।
এই ব্যাপারে তিনি ওই বছরের ৬ আগস্ট মিসিং ডায়েরি করেন। কিন্তু গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ওই নাবালিকার কোনও সন্ধান না পাওযার পর তিনি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তৃতীয় অভিযোগটিও দায়ের হয়েছিল গোসাবা থানায়। গোসাবার বিজয়নগরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি অভিযোগ জানান, গত ২০১৭ সালের প্রথম দিকে তাঁর ২১ বছরের ছেলে তন্ময় পাত্র নিখোঁজ হয়ে যান। তিনি ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে গোসাবা এলাকারই বাসিন্দা এক তরুণীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। তারই জেরে তরুণীর পরিবারের লোকেরা তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে কোথাও লুকিয়ে রেখেছেন।
এই তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই আলাদা তিনটি অপহরণের মামলা দায়ের করে। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্তের অঙ্গ হিসাবেই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে ওই ‘অপহৃত’ শিশু বা যুবক, মহিলা কোথায় রয়েছেন, সেই তথ্য জানার প্রয়োজন। সেই কারণে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার স্টেশনগুলিতে নিখোঁজদের রঙিন ছবি ও বিবরণ দিয়ে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার বাজার ও থানায়ও দেওয়া হয়েছে পোস্টার। যদিও সিবিআইয়ের মতে, ‘অপহৃত’ বা নিখোঁজ একটি সাড়ে চার বছর ও অন্য সাত বছর বয়সের শিশুকন্যার বয়স অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তখনকার ছবি দেখে এখন তাদের শনাক্ত করা সমস্যাও হতে পারে। তবুও কোনও তথ্য আসার অপেক্ষায় সিবিআই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.