অরূপ বসাক, মালবাজার: বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ নিয়ে সতর্কতা বেড়েছে সীমান্ত এলাকায়। এই মুহূর্তে সে দেশ থেকে অত্যাচারিত হিন্দুরা এপার বাংলায় আসার জন্য ভিড় বাড়াচ্ছেন। অশান্তির আঁচ এড়িয়ে তাঁদের রুখতে তৎপর সীমান্তরক্ষী বাহিনীও। এই পরিস্থিতিতে আফগান নাগরিকদের ভুয়ো সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ির মাল পুরসভার বিরুদ্ধে। এই অবৈধ কাজ ধরা পড়ায় মাল পুরসভাকে ফের নোটিস পাঠাল সিবিআই। এনিয়ে পর পর দুমাসে দুবার নোটিস পাঠানো হল। কীসের ভিত্তিতে ওই আফগান নাগরিকদের শংসাপত্র দেওয়া হল? তা লিখিত আকারে জমা দিতে হবে পুরসভা কর্তৃপক্ষকে।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন আগে দিল্লিতে সিবিআইয়ের হাতে ৬ জন আফগান নাগরিক গ্রেপ্তার হন। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় পাসপোর্টগুলি পরীক্ষা করে সিবিআই আধিকারিকরা জানতে পারেন, পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে আসল জন্ম ও মৃত্যুর যে শংসাপত্র তাঁরা দিয়েছিলেন, সেই নথি ভারতেরই। সেসব সার্টিফিকেট দিয়েছিল মালবাজার পুরসভা। মোট ১৫ জন আফগান নাগরিকের ক্ষেত্রে এই ধরনের শংসাপত্র প্রদান করা হয় বলে সূত্রের খবর। তবে সেসব শংসাপত্র ভুয়ো বলে দাবি তদন্তকারীদের।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যে দুবার সিবিআইয়ের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছিল মালবাজার পুরসভাকে। ডিসেম্বরে আবারও ইমেল মারফত নোটিস এসেছে বলে জানা গেছে। তবে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে কী কী তথ্য নেওয়া হয়েছিল, সেসব জানতে চাওয়া হয়েছে মালবাজার পুরসভার কাছে। জানা যাচ্ছে, গত নভেম্বর মাসে নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। তবে পুরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই নোটিস তারা পায়নি। পরবর্তীতে ৫ ডিসেম্বর পুনরায় সিবিআই নোটিস পাঠায় মাল পুরসভায়। এ ব্যাপারে মাল পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ”চিঠি এসেছে। ১৫ টি মধ্যে ১১টি জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট আমাদের এখান থেকে ইস্যু হয়েছে। তবে যাঁরা এই সার্টিফিকেট করতে আসে, তখন তাঁরা যেসব নথি জমা করে, তা দেখে বোঝা যায় না কোন দেশের নাগরিক-পাকিস্তান নাকি আফগানিস্তান। পুরসভার যে দপ্তরে এইসব জন্ম মৃত্যুর সার্টিফিকেট ইস্যু করে, সেই দপ্তরের আধিকারিককে বলা হয়েছে, কীসের ভিত্তিতে এসব সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে, সিবিআইকে সেই জবাব লিখিত আকারে দেওয়ার জন্য।”
এনিয়ে ইতিমধ্যে সোচ্চার হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির মালটাউন মণ্ডল সভাপতি নবীন সাহার প্রতিক্রিয়া, ”পাসপোর্ট ইস্যুকে কেন্দ্র করে পুরসভার নাম আগেই জড়িয়েছিল। তদন্তের মধ্য দিয়ে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হোক। পুরসভার কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.