শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: দিন তিনেক আগেই রায়গঞ্জের ইটাহারের বিজেপি কর্মী অনুপ রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি (CID) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য। সেই মতোই শুক্রবার ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেন সিআইডি আধিকারিকরা। ওই ঘটনার তদন্তকারী অফিসার পঙ্কজ ঝা এদিন সিআইডি আধিকারিকদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। তবে রাজ্যের নির্দেশে খুশি নন নিহত বিজেপি কর্মীর মা। তাঁর দাবি, সিবিআই তদন্ত করুক অনুপের মৃত্যুর।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। একটি ডাকাতির ঘটনার তদন্তের জন্য ইটাহারের দুর্লভপুর পঞ্চায়েতের নন্দনগ্রামের বাড়ি থেকে বাইশ বছরের অনুপ রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তুলে নিয়ে যায় রায়গঞ্জ থানায়। ওইদিন সন্ধেয় অনুপের মৃত্যু হয়। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত হয়। কিন্তু মৃতের মা ও বিজেপি তরফে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানান। ইটাহার থানায় এবং রায়গঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে রায়গঞ্জ থানার পাঁচ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ জানানো হয়। পরবর্তীতে রায়গঞ্জের জেলা মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত পুনরায় অনুপের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।
দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তে হাজির থাকা বিজেপি (BJP) নেতা প্রদীপ সরকার জানিয়েছিলেন, “অনুপ রায়কে প্রথমে লোহার রড কিংবা ভারী জিনিস দিয়ে মারধর করা হয়। মাথায় ও পিছনে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে এলোপাথারি গুলি করা হয়। ময়নাতদন্তে হাতে ও বুকে এবং পশ্চাতে চারটি সেলাই মিলেছে। ওই সব জায়গায় গুলি করা হয়েছিল। প্রথমবার ময়নাতদন্তে গুলির প্রমাণ লোপাট করতে তড়িঘড়ি ক্ষতস্থান সেলাই করা হয়েছিল। কারণ, ময়নাতদন্তে পিছনে বা হাতে সেলাই থাকার কথা নয়। পরিষ্কার গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ঝলমলে রোদ নাকি বৃষ্টিতে ভিজবে বাংলা? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]
এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্ত ৫ পুলিশ অফিসারের মধ্যে তিন জন। এখনও ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের শোকজও করা হয়নি বলেই খবর। এই পরিস্থিতিতে তদন্তভার হাতে নিল সিআইডি। যদিও এতে খুশি নন মৃতের মা গীতারানী রায়। তাঁর কথায়, পুলিশ আর সিআইডির তদন্ত সমান। তাঁরা সিবিআই (CBI) তদন্ত চান। প্রয়োজনে কোর্টেও যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু ঘটনার পর কেন এখনও শোকজ করা হল না অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের? এ প্রশ্নের উত্তর দেননি রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার।