সৈকত মাইতি, তমলুক: দিনটা সত্যিই অন্যরকম ছিল। প্রেমের জোয়ারে ওঁরা ভেসেছিলেন বেশ কিছুকাল আগেই। বাড়িতে জানিয়েও ছিলেন। কিন্তু কোনও পরিবারই রাজি ছিল না। তবে ভ্যালেন্টাইনস ডে ও শিবরাত্রির শুভদিনেই পেলেন সেরা খবরটা। তাঁদের প্রেম মেনে নিয়েছে দু’ই বাড়ি। হবে বিয়েও। পুলিশ অফিসাররা পাশে দাঁড়াতেই চার হাত এক করার সৌভাগ্য হচ্ছে দুই সিভিক ভলানটিয়ারের।
ভালবাসার দিন ও শিবরাত্রি উপলক্ষে রক্তদান শিবিরে পাশাপাশি বেডে শুয়েই সুখবরটা পান তাঁরা। পরে অবশ্য বুঝতে পারেন, তাঁদের প্রেমের কথা জানাজানি হওয়ার পরই দুই বাড়িকে বোঝানোর কাজে নেমে পড়েছিল কোলাঘাট বিট হাউসের থানার দাদারা। আসলে এখানেই তো কাজের সূত্রে আলাপ হয়েছিল সুমন ও জয়শ্রীর। কোলাঘাট থানার অন্তর্গত ছাতিনদা গ্রামের যুবক সুমন দাস। পড়াশোনো শেষ করে বেকারত্ব ঘোচাতে সিভিক ভলানটিয়ারের কাজ নিয়েছিলেন। এদিকে পাশেরই গ্রামের বাসিন্দা জয়শ্রী সরকারও একইভাবেই এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। কোলাঘাট বিট হাউস থানাতেই তাঁদের ডিউটি ছিল। এমন অবস্থায় কর্মসূত্রেই তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদিকে শিবরাত্রি অপরদিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষে কোলাঘাট বিট হাউস প্রাঙ্গনেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। রক্তদান করেন প্রায় ৯৮ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবেই এই প্রেমিক যুগল এগিয়ে আসেন। পাশাপাশি বেডে শুয়েই জীবনে প্রথমবার রক্তদান করলেন। প্রেমের পরিণতি পেতে চলেছে খবরটা আসতেই জেলার পুলিশ কর্তারা তাঁদের সম্বর্ধনা জানান। উপস্থিত ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবপ্রসাদ পাত্র, তমলুক মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুরজিৎ মণ্ডল, সিআই বিশ্বজিৎ হালদার, কোলাঘাট থানার ওসি কাশীনাথ চৌধুরি-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। উচ্ছ্বসিত সুমন বলেন, “পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা হলেও আমরা একে অপরকে চিনতাম না। কর্মসূত্রে বিট হাউস থানাতে এসেই বান্ধবী জয়শ্রীর সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। এরপর এই পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রাথমিকভাবে উভয় পরিবারই এই সম্পর্ক মেনে না নিলেও এখন রাজি হয়েছে। আগামী এপ্রিলের দিকে বিয়েটা সেরে ফেলতে চান সুমন ও জয়শ্রী। সেই নতুন পথে যাত্রা শুরু হল এই ভালবাসার দিনেই।
ছবি : রঞ্জন মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.