বিক্রম রায়, কোচবিহার: কোচবিহারে দিনকয়েক ধরে বেড়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ। জখমও হচ্ছেন বহু দলীয় নেতাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে জেলাসফরে এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কঠোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী শক্তিকে হারাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়াই যে একমাত্র রাস্তা, সেকথাও বলেন তিনি।
গত সপ্তাহেই উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তবে সেই সময় প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আছড়ে পড়ে দক্ষিণবঙ্গে। তাই বাধ্য হয়ে উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুলবুলের প্রকোপ কাটতেই সোমবার কোচবিহারে পৌঁছলেন তিনি। যতদিন যাচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যা যে কোচবিহারের সংগঠনের উপর কুপ্রভাব ফেলছে, তা কানে পৌঁছেছে তৃণমূল সুপ্রিমোর। তাই এদিন কোচবিহারে দলীয় সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সুর চড়ালেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যানকে ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তৃণমূলে কোনও নেতা নেই। তৃণমূলের একটাই গোষ্ঠী। একটাই নেতা জোড়া ফুল।” গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারে তৃণমূলকে হারিয়ে সাংসদের আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন নিশীথ প্রামাণিক। তবে তার জন্য দলীয় নেতৃত্বের দুর্বলতা নয় বিজেপির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার অভিযোগে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “রাতের অন্ধকারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে অপারেশন করা হয়েছে। টাকা বিলিয়ে ভোট কেনা হয়েছে।”
এদিনের দলীয় সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি প্রসঙ্গে আতঙ্কিত না হওয়ার কথাই বলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি বলেন, “এনআরসি খুড়োর কল। এনআরসি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি হচ্ছে। কুৎসা করে টাকা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের ঝগড়া লাগাচ্ছে।” রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় সভার পরই কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পুজোও দেন তিনি।
এরপর রাসমেলাও ঘুরে দেখেন। সেখানেও জনসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.