রাজা দাস, বালুরঘাট: বাম ছাত্র সংগঠন ছেড়ে বেরিয়ে আসায় এক পড়ুয়াকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ এসএফআইয়ের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে। এমনকী, ওই পড়ুয়ার নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হবে বলে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ঘটনায় বালুরঘাট থানায় ৩ জন বাম ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সায়ন সরকার নামে নির্যাতিত পড়ুয়া। সায়নের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদে সরব তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট শহরের সংকেত পাড়ার বাসিন্দা সায়ন সরকার। একাদশ শ্রেণি থেকেই বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সঙ্গে জড়িত তিনি। গতবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তবে আশানুরূপ ফলাফল হয়নি। এবার পড়াশোনায় জোর দেবে বলে স্থির করেন। এজন্য ছাত্র সংগঠন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। কিন্ত ওই পড়ুয়ার এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি এসএফআই-এর তিন নেতা। তাঁরা সায়নকে জোর করে সাংগঠনিক কাজে নিয়োগ করতে চাপ সৃষ্টি করে বলে দাবি। গত বৃহস্পতিবার সেই তিন বাম ছাত্রনেতা একটি বাড়িতে আলোচনার জন্য ডাকেন সায়নকে। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকী, তাঁকে নগ্ন করে ছবি তোলা হয় বলেই দাবি। ঘটনায় আক্রান্ত পড়ুয়া বালুরঘাট থানায় তিন বাম ছাত্র নেতা অভিজিৎ মণ্ডল, মৃদঙ্গ দাস এবং আর্যদীপ দাসের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বালুরঘাট থানায়। যা নিয়েই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাংলার শহরাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রশংসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের, পুরস্কার পাচ্ছে ৩ স্বাস্থ্যকেন্দ্র]
আক্রান্ত পড়ুয়া সায়ন সরকার বলেন, “রাজনীতি করার জন্য আমার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়। এবার ভালভাবে পড়াশোনা করব এবং বাবা বাইরে পড়তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব কারণে ছাত্র রাজনীতি থেকে সরে যেতে চাই বলে সিনিয়রদের জানিয়েছিলাম। এরপরেই গত বৃহস্পতিবার সিনিয়ার অভিজিৎ মণ্ডল ফোন করে তাঁর বাড়িতে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। অভিজিৎ ছাড়াও সেখানে আরও ২ জন ছাত্র এবং ১ জন ছাত্রী ছিলেন। তাঁরা আমার কাছে সংগঠন ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিস্তারিত জানিয়েদি আমি। এরপরেই আমাকে বেধরক মারধর করেন তাঁরা। শরীরের পোশাক খুলে নগ্ন করে ছবি তোলেন। তাঁদের সংগঠন না করলে আমার নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেবে বলে ভয় দেখায়। এরপরেই আমি তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। দোষীদের শাস্তি চাইছি।”
অভিযুক্ত অভিজিৎ মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কারসাজির জন্য এমন হচ্ছে। মিথ্যে মাদক কারবারে আমাদের এক যুবককে ফাঁসানোর চেষ্টা করছিল সায়ন। যা ধরে ফেলেছি আমরা। আর সে কারণে এই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অমরনাথ ঘোষ জানান, “ওই ছাত্র সাহায্যের জন্য আমাদের কাছে এসেছিল। একজন ছাত্রর ওপর অমানবিক অত্যাচারের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি। দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।” এই ঘটনায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে।