Advertisement
Advertisement

কাঁঠালে পুরে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার, মুর্শিদাবাদ যেন ‘মিনি’ মুঙ্গের

অস্ত্র আমদানি-রপ্তানির অন্যতম প্রধান করিডর ডোমকল৷

Cops crack arms racket in Murshidabad
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 12, 2017 5:17 am
  • Updated:September 12, 2017 5:17 am

কল্যাণ চন্দ্র: এক বছরে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে মোট ৪৫১ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার হয়েছে ৪২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৬৪ রাউন্ড গুলি, ৫৩৯ কেজি বারুদ। জেলা পুলিশ সুপার শ্রী মুকেশ জানিয়েছেন, বহরমপুর মহকুমা থেকে ৮৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪৪ রাউন্ড গুলি এবং লালবাগ মহকুমা থেকে ৮০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩০ রাউন্ড গুলি এবং কান্দি মহকুমা থেকে ৩১ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৮ রাউন্ড গুলি, ৩৮ কেজি বোমার মশলা এবং জঙ্গিপুর মহকুমা থেকে ৮৪ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২১৮ রাউন্ড গুলি, ৪৮৭ কেজি বোমার মশলা এবং ডোমকল মহকুমা থেকে ১৪৫টি আগ্নেয়াস্ত্র , ৩২৪ রাউন্ড গুলি ও ১৪ কেজি বোমার মশলা উদ্ধার হয়েছে। এই বিপুল পরিমান গুলি-বন্দুকের মধ্যে রয়েছে কারবাইন মেশিনগান, নাইন এমএম পিস্তল, সেভেন এমএম পিস্তল, ডবল ব্যারেল ও সিঙ্গেল ব্যারেল এর মতো আগ্নেয়াস্ত্র। এই অস্ত্রগুলি পাচার করা হত কাঁঠালের মধ্যে লুকিয়ে। ফলে অনেক সময়ই তা চোখ এড়িয়ে যেত।

[জেলা জুড়ে বাম বিক্ষোভে পুলিশকে ইট, বোমা হামলা]

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, মূলত বিহারের মুঙ্গের, ঝাড়খণ্ড ও মালদা থেকে বিভিন্ন রুটে এই জেলায় অস্ত্র আনত কারবারিরা। কিন্তু ভিন রাজ্য থেকে অস্ত্র আনার নানা ঝক্কি থাকে। ফলে অনেক সময়ই মুঙ্গের থেকে অস্ত্র বানানোর কারিগরকে মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে জেলাতেও গড়ে তোলা হয়েছে অস্ত্র তৈরির কারখানা। তার হদিশও মিলেছে। মুঙ্গেরের কারিগরদের হাতে তৈরি এক একটি নাইনএমএম পিস্তলের দাম ২৫ হাজার টাকা৷ চোর, ডাকাত, ছিনতাইবাজদের মতো দুষ্কৃতীরা তো আছেই৷ তাছাড়াও ভোট এলে এই সব অস্ত্রের দেদার চাহিদা বেড়ে যায়৷ ডোমকল আর বাংলাদেশ৷ কাঁটাতারের এপার-ওপার৷ ফলে এপার থেকে ওপারে অস্ত্র আমদানি রপ্তানিতে ডোমকল যেন হয়ে উঠেছে অন্যতম করিডর৷

Advertisement

কলকাতার কাছে ধরা পড়া মুঙ্গেরের অস্ত্র কারিগররা তো স্বীকার করেছে, বাংলাদেশে এই সব অস্ত্রের দাম দ্বিগুন৷ কিন্তু বছর দেড়েক ধরে তাদের এই ব্যবসায় প্রধান বাধা হয়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার৷ নীতীশের নির্দেশে এখন মুঙ্গেরে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়ে এই ব্যবসা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছে পুলিশ৷ তাই চাপে পড়ে এ রাজ্যে ঠাঁই নিয়েছে মুঙ্গেরের কারিগররা৷ আর তা নিয়েই মুর্শিদাবাদ-সহ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসনের চোখের ঘুম উড়েছে৷ ডোমকল এলাকায় মজুদ অস্ত্র বেশ করয়েকবার ধরা পড়েছে৷ পুলিশের অনুমান, এই অস্ত্রগুলি যে সবসময় লোকাল এলাকায় অপারেশন চালানোর জন্য মজুত করা হয় তা কিন্তু নয়, বেশিরভাগটাই বাংলাদেশে রপ্তানি করার জন্য৷ তার অন্যতম কারণ অবশ্যই বেশি দাম৷

[ফের জাতীয় স্তরে রাজ্যের স্বীকৃতি, ৯টি প্রকল্প জিতল পুরস্কার]

জেলা পুলিস সুপার জানান, যে সমস্ত দুষ্কৃতীরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছে তাদের গতিবিধি দেখে পিছু নিত পুলিশ। কোন কোন লোকের সঙ্গে ওঠা বসা, সে বিষয়েও নজর রাখা হয়। এছাড়া নিজস্ব সোর্স লাগিয়ে গত এক বছরে এই বিশাল পরিমান অস্ত্র-গুলি-বারুদ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে কথা বলছেন ডোমকল পৌরসভার নবাগত পুরপিতা সৌমিক হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশের সাহায্যে বোমা গুলির শিল্প বন্ধ হয়েছে। খুনের রাজনীতি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ